উত্তর প্রদেশ। অনেকেই বলেন, ভালোবাসা মানুষের জীবনকে পুরোপুরি বদলে দেয়। উত্তরপ্রদেশের মাউ জেলার মুহম্মদাবাদ গোহনার বাসিন্দা ডা. সুমন্ত গুপ্তার গল্পও ঠিক তাই। তিনি হতে চেয়েছিলেন একজন সফল ব্যবসায়ী, কিন্তু প্রেমিকাকে পাওয়ার জন্য তাঁকে শেষমেশ ডাক্তার হতে হলো।
অরবিন্দ কুমার গুপ্তার পুত্র সুমন্তের ছোটবেলা থেকেই ব্যবসার প্রতি ঝোঁক ছিল। তিনি ব্যবসার মাধ্যমেই নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার স্বপ্ন দেখতেন। কিন্তু ২০১০ সালে রচনা গুপ্তার সঙ্গে দেখা হওয়ার পর তাঁর জীবনের লক্ষ্য সম্পূর্ণ ঘুরে যায়।
ভালোবাসা পেতে ডাক্তার হওয়ার শর্ত:
সুমন্ত যখন বাড়িতে তাঁর সম্পর্কের কথা বলেন, তাঁর বাবা অরবিন্দ গুপ্তা অসন্তুষ্ট হন। তিনি ছেলেকে স্পষ্ট জানান, যদি সুমন্ত তাঁর পছন্দের মেয়েকে বিয়ে করতে চান, তবে তাঁকে অবশ্যই এমবিবিএস ডিগ্রি অর্জন করতে হবে। প্রেমের উন্মাদনায় সুমন্ত তাঁর ব্যবসায়িক স্বপ্ন সরিয়ে রেখে ডাক্তার হওয়ার কঠিন সিদ্ধান্ত নেন।
৬ বছরের কঠোর পরিশ্রম:
২০১২ সালে সুমন্ত এমবিবিএস পড়ার জন্য লখনউয়ের কেজিএমইউতে ভর্তি হন। ছয় বছরের কঠোর পরিশ্রমের পর তিনি ২০১৮ সালে এমবিবিএস ডিগ্রি অর্জন করেন। ২০১৯ সালে স্নাতকোত্তর পড়ার জন্য নয়াদিল্লিতে যান এবং ২০২২ সাল থেকে নয়াদিল্লির ভগবান মহাবীর হাসপাতালে প্র্যাকটিস শুরু করেন। বর্তমানে তিনি মুহম্মদাবাদ গোহনার কেশরী রাজ হাসপাতালে বিনামূল্যে চিকিৎসা শিবির আয়োজন করছেন।
নিয়তির নির্মম পরিহাস:
ডাক্তার হওয়ার পর সুমন্ত ২০১৭ সালে তাঁর প্রেমিকা রচনা গুপ্তাকে বিয়ে করেন। কিন্তু নিয়তির পরিহাসে, ২০২৪ সালে সন্তান প্রসবের সময় রচনা মারা যান। এই মর্মান্তিক ঘটনার পর রচনার পরিবার সুমন্তের সঙ্গে তাঁর বোনের বিয়ে দেয়।
ব্যক্তিগত কারণে ডাক্তার হওয়ার ইচ্ছা জন্ম নিলেও, এখন রোগীদের সেবা করাই তাঁর প্রধান লক্ষ্য বলে জানান ডা. সুমন্ত গুপ্তা। তিনি বলেন, “ঈশ্বর আমাকে এই জ্ঞান এবং ক্ষমতা দিয়েছেন, তাই এটি আমার কাছে সীমাবদ্ধ রাখা ভুল হবে। যাঁরা চিকিৎসার খরচ বহন করতে পারেন না, আমি তাঁদের সম্ভাব্য সকল সহায়তা প্রদান করব।”