জনপ্রিয় গায়ক জুবিন গর্গ-এর সিঙ্গাপুরে মৃত্যুর ঘটনায় এবার চাঞ্চল্যকর মোড়। অসম পুলিশ এই ঘটনায় গায়কের ম্যানেজার সিদ্ধার্থ শর্মা এবং ‘নর্থ ইস্ট ইন্ডিয়া ফেস্টিভ্যাল’ (NEIF)-এর মুখ্য আয়োজক শ্যামকানু মহান্তের বিরুদ্ধে খুনের চার্জ (Charge of Murder) এনেছে। সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে জানা গেছে, বুধবার এই দুই অভিযুক্তকে ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজতে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
দিল্লি থেকে গ্রেফতার, যুক্ত হলো খুনের ধারা
লুক-আউট নোটিশ জারি হওয়ার পর থেকেই মহান্ত ও শর্মা ছিলেন পুলিশের নজরে। মঙ্গলবার রাতে তাঁদের দিল্লি থেকে গ্রেফতার করা হয় এবং পুলিশি ঘেরাটোপে গুয়াহাটি নিয়ে আসা হয়।
গ্রেফতার: শ্যামকানু মহান্ত সিঙ্গাপুর থেকে নয়াদিল্লির ইন্দিরা গান্ধী বিমানবন্দরে নামলে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। অন্যদিকে, সিদ্ধার্থ শর্মাকে ধরা হয় গুরুগ্রামের একটি অ্যাপার্টমেন্ট থেকে।
নতুন চার্জ: জুবিন গর্গ মৃত্যু-তদন্তে গঠিত বিশেষ তদন্তকারী দল বা এসআইটি (SIT)-এর প্রধান স্পেশাল ডিজিপি মুন্না প্রসাদ গুপ্ত নিশ্চিত করেন যে এই মামলায় নতুন চার্জ আনা হয়েছে। তিনি পিটিআইকে বলেন, “আমরা এখন এফআইআর-এ বি এন এস-এর ১০৩ নম্বর ধারা যোগ করেছি। তদন্ত চলছে।”
শাস্তি: ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১০৩ ধারায় খুনের শাস্তি নির্ধারণ করা হয়েছে, যা মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি জরিমানাও হতে পারে। এর আগে, শর্মা এবং মহান্তের বিরুদ্ধে খুন, ষড়যন্ত্র এবং অবহেলার কারণে মৃত্যু ঘটানোর অভিযোগ আনা হয়েছিল।
ন্যায়বিচার চেয়ে সরব জুবিনের স্ত্রী
জুবিন গর্গের স্ত্রী গরিমা সাইকিয়া গর্গ প্রথম থেকেই যথাযথ তদন্তের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। তাঁর দাবি, জুবিনের সঙ্গে যারা ছিলেন, তাদের উত্তর দিতে হবে।
“আমরা জানতে চাই তাঁর কী হয়েছিল? কেন এটা হল এবং কেন এমন অবহেলা হল? আমরা জবাব চাই।” গরিমা সাংবাদিকদের বলেন।
তিনি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অবহেলার গুরুতর অভিযোগ এনেছেন: “ম্যানেজার সিদ্ধার্থ শর্মা জানতেন যে, জুবিন জল বা আগুনের কাছে যাবে না, কারণ এটা তার এপিলেপটিক সিজার বাড়িয়ে তুলবে… ওঁরা যখন জানতেন যে ও (জুবিন) সাঁতার কাটার অবস্থায় নেই, তখন ওঁরা কেন ওকে জল থেকে তুললেন না?”
গরিমা আরও বলেন, “পরিবার আশা করেছিল, যে সমস্ত মানুষ ওকে সঙ্গে নিয়ে গেছেন তাঁরা ওর যত্ন নেবেন। এখন আমরা বুঝতে পারছি ওঁরা সেটা করেননি। আমি ন্যায়বিচার চাই। তদন্ত প্রক্রিয়ায় আমার সম্পূর্ণ আস্থা আছে।”
অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মাও আগেই হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন যে অভিযুক্তরা সিআইডি অফিসে হাজির না হলে অসম পুলিশ তাঁদের ফিরিয়ে আনার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে। এই মামলায় খুনের চার্জ যুক্ত হওয়ায় তদন্ত নতুন দিকে মোড় নিল।