বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনুসকে লক্ষ্য করে এবার ভারতের মাটি থেকে তীব্র আক্রমণ শানালেন নির্বাসিত আওয়ামী লিগ নেতা বাহাউদ্দিন নাসিম। কলকাতায় এসে সংবাদ সংস্থা ANI-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি অভিযোগ করেন, বর্তমান প্রশাসন বাংলাদেশে “জঙ্গি ও অপরাধীদের মদত দিচ্ছে”, যার ফলশ্রুতিতে দেশ এক চরম অর্থনৈতিক ও সাম্প্রদায়িক সংকটের মুখে দাঁড়িয়েছে। শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর থেকে বাংলাদেশ কার্যত অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে বলে দাবি তাঁর।
নাসিমের দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত এক বছরে বাংলাদেশে অন্তত ২৫০টিরও বেশি তৈরি পোশাক কারখানা বন্ধ হয়ে গিয়েছে, যার ফলে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন কয়েক হাজার শ্রমিক। তিনি বলেন, “শেখ হাসিনার আমলে যেখানে জিডিপি বৃদ্ধির হার ৮ শতাংশের উপরে ছিল, সেখানে এখন অর্থনীতি দ্রুত তলার দিকে যাচ্ছে। বৈদেশিক বিনিয়োগকারীরা আস্থা হারাচ্ছেন এবং রপ্তানি বাণিজ্য লাটে উঠেছে।” অর্থনীতির এই বেহাল দশার জন্য তিনি সরাসরি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রশাসনিক ব্যর্থতাকে দায়ী করেছেন।
সা্প্রদায়িক অস্থিরতা নিয়েও সুর চড়িয়েছেন এই আওয়ামী লিগ নেতা। ২০২৫ সালের ১৯ ডিসেম্বর ময়মনসিংহে হিন্দু পোশাকশ্রমিক দীপু চন্দ্র দাসের পিটিয়ে হত্যার ঘটনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “সংখ্যালঘুরা আজ চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। পুলিশ ও প্রশাসন অপরাধীদের রক্ষা করছে এবং উগ্রবাদী শক্তিকে প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে।” নাসিম আরও জানান, বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা পুনরুদ্ধারের লড়াইয়ে তারা ভারতের সমর্থন প্রত্যাশা করেন।
বর্তমানে বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ডিসেম্বর মাস জুড়ে বিভিন্ন জেলায় অতিরিক্ত পুলিশ ও আধাসামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। তবে বিরোধীদের দাবি, পরিস্থিতি এখনও থমথমে। রাজনৈতিক মহলের মতে, কলকাতায় বসে নাসিমের এই বক্তব্য বিশ্বমঞ্চে ইউনুস সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার এক কৌশল। যদিও অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে এই সমস্ত অভিযোগকে বারবারই ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে খারিজ করা হয়েছে।