আনন্দ, উৎসবের বিজয়া দশমীর সকালেই হাড়হিম করা এক ঘটনার সাক্ষী হলো উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগর। বৃহস্পতিবার সকালে অশোকনগর পাঁচ নম্বর মোড় সংলগ্ন এলাকায় রাস্তার পাশে ঝোপের মধ্য থেকে এক অজ্ঞাতপরিচয় যুবতীর ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার হয়। এই ঘটনায় এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
মাথায় আঘাত, শরীরে একাধিক গভীর ক্ষত
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গভীর রাত পর্যন্ত নবমী পুজো উপলক্ষে হাবড়া ও অশোকনগরের বিভিন্ন মণ্ডপে দর্শনার্থীদের ভিড় ছিল। এরপরেই সকালে স্থানীয় বাসিন্দারা ঝোপের মধ্যে যুবতীর দেহটি দেখতে পান।
দেহ উদ্ধারের পর দেখা যায়, মৃত যুবতীর মাথা-সহ শরীরের একাধিক জায়গায় গভীর ক্ষত চিহ্ন রয়েছে। ফলে এটি খুন নাকি দ্রুতগতির গাড়ির ধাক্কায় দুর্ঘটনা— তা নিয়ে তৈরি হয়েছে গভীর ধোঁয়াশা। দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য বারাসত জেলা হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা শিপ্রা দে বলেন, “সকাল সাড়ে ৬টা নাগাদ এক মহিলা প্রথমে দেহটি পড়ে থাকতে দেখেন। ছুটে এসে দেখি ঝোপের মধ্যে এক যুবতীর ক্ষতবিক্ষত দেহ। শরীরে এতটাই আঘাত ছিল যে চেনার উপায় নেই। স্থানীয়রাই পুলিশে খবর দেন।”
জনবহুল এলাকায় কীভাবে ঘটল এই ঘটনা?
যে জায়গায় যুবতীর দেহ পড়েছিল, সেই যশোর রোডের পাশে যথেষ্ট আলো রয়েছে এবং রাতে পুলিশের টহলদারিও ছিল। ফলে জনবহুল ওই জায়গায় দুষ্কৃতীদের পক্ষে কাউকে খুন করে পালিয়ে যাওয়া বেশ কঠিন বলে মনে করছে পুলিশ।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, রাস্তায় দ্রুতগতি কোনও গাড়ির ধাক্কায় ওই যুবতীর মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে। তবে প্রশ্ন উঠছে, রাতে ওই যুবতী কি রাস্তায় একা ছিলেন? কীভাবে তিনি জনবহুল ওই জায়গায় এলেন? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন তদন্তকারীরা।
স্থানীয় নন যুবতী, পরিচয় জানতে তৎপর পুলিশ
স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করেও যুবতীর পরিচয় জানা যায়নি। কেউই তাঁকে চিনতে পারেননি। ফলে তদন্তকারীদের ধারণা, যুবতী স্থানীয় কেউ নন।
অশোকনগর থানার পুলিশ ইতিমধ্যে যুবতীর নাম-পরিচয় জানতে আশপাশের থানায় যোগাযোগ করেছে এবং গোটা ঘটনা বিশদে জানিয়েছে।
বারাসত পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (জোনাল) অতীশ বিশ্বাস জানিয়েছেন, “খুন না দুর্ঘটনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলে বিষয়টি স্পষ্ট হবে। অজ্ঞাতপরিচয় ওই যুবতীর সম্পর্কে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। তাঁর নাম-পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে।”