মুর্শিদাবাদের বেলডাঙা এখন নতুন বিতর্কের কেন্দ্র। তৃণমূল থেকে আজীবনের জন্য সাসপেন্ড হওয়া বিতর্কিত নেতা হুমায়ুন কবীর আগামী ৬ ডিসেম্বর, অর্থাৎ বাবরি মসজিদ ধ্বংসের দিনেই সেখানে একটি নতুন বাবরি মসজিদের শিলান্যাস করতে চলেছেন। শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে দল থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কৃত হলেও, এই কর্মসূচির মাধ্যমে তিনি ফের লাইমলাইটে।
বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা এই তৃণমূল নেতা এর আগেও বারবার দলবদল এবং বিস্ফোরক মন্তব্যের জন্য শিরোনামে এসেছেন। কংগ্রেস থেকে শুরু করে তৃণমূল, নির্দল এবং বিজেপি—বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দলের হয়ে রাজনীতির ময়দানে নেমেছেন তিনি।
এক নজরে হুমায়ুন কবীরের বিতর্কিত রাজনৈতিক গ্রাফ:
| সময়কাল | দল/অবস্থান | উল্লেখযোগ্য মোড় |
| ২০১১ | কংগ্রেস (বিধায়ক) | মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রথম মন্ত্রিসভায় মন্ত্রী। |
| ২০১২-২০১৫ | তৃণমূলে যোগদান | দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে ৬ বছরের জন্য সাসপেন্ড। |
| ২০১৬ | নির্দল প্রার্থী | সাসপেনশনের মধ্যেই রেজিনগর থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা, পরাজিত। |
| ২০১৮ | বিজেপি-তে যোগদান | লোকসভা নির্বাচনে মুর্শিদাবাদ থেকে লড়ে হার। |
| ২০২১ | তৃণমূলে প্রত্যাবর্তন (বিধায়ক) | ৬ বছরের সাসপেনশন শেষে ফিরে এসে ভরতপুর থেকে জয়। |
| ২০২৫ | তৃণমূল থেকে আজীবন সাসপেন্ড | বাবরি মসজিদ বিতর্কের জেরেই চূড়ান্ত বহিষ্কার। |
হুমায়ুন কবীরের সবচেয়ে বিস্ফোরক মন্তব্যগুলি:
-
শুভেন্দুকে হুমকি (মার্চ): “মুর্শিদাবাদে ওঁর (শুভেন্দু অধিকারী) গাড়ির চাকা আমি ঘুরতে দেব না।”
-
‘পুলিশকে ঠুসে দেব’: “আমাকে মারতে এলে ঠুসে দেব। ক্ষমতা থাকলে মুর্শিদাবাদে ঢুকুন।”
-
সাম্প্রদায়িক মন্তব্য (মে ২০২৪): “২ ঘণ্টার মধ্যে আমি যদি হিন্দুদের ভাগীরথী নদীতে ফেলতে না পারি তাহলে আমি রাজনীতি ছেড়ে দেব।”
-
বিধায়কদের হুমকি: দুই বিধায়ককে ‘মেরে পা ভেঙে’ দেওয়ার হুমকি দিয়ে দলের শোকজ।
৬ ডিসেম্বর ‘বাবরি মসজিদ’ বিতর্ক:
বিজেপি-র আপত্তি এবং এলাকায় সাম্প্রদায়িক হিংসা ছড়ানোর আশঙ্কার মধ্যেই হাইকোর্টের রায়ে হুমায়ুন কবীর এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করছেন। তাঁর সাফ প্রশ্ন: দিঘায় যদি জগন্নাথ মন্দির হতে পারে এবং সরকার ক্লাবগুলিকে পুজোর অনুদান দিতে পারে, তবে মুসলিমদের জন্য একটি মসজিদ তৈরি করা যাবে না কেন? দল থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার পরেও এই পদক্ষেপ তাঁর রাজনৈতিক অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার এক মরিয়া কৌশল বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।