কলকাতা শহরের গাছগুলি তাদের প্রথম বিশেষ পরিষেবা পেল। এটি হলো, ‘ট্রি অ্যাম্বুল্যান্স’। রাসবিহারী বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক তথা কলকাতা কর্পোরেশনের উদ্যান বিভাগের মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমারের উদ্যোগে তাঁর বিধায়ক তহবিলের টাকায় কেনা হয়েছে এই বিশেষ অ্যাম্বুল্যান্সটি। শহরের যেকোনও প্রান্তে অসুস্থ বা ক্ষতিগ্রস্ত গাছের খোঁজ দিলেই, পরিষেবা দিতে দ্রুত পৌঁছে যাবে এই অ্যাম্বুল্যান্স।
ভারতের প্রেক্ষাপটে ‘ট্রি অ্যাম্বুল্যান্স’:
-
২০১৭ সালে ভারতে প্রথম এই পরিষেবা শুরু হয়েছিল চেন্নাইতে। মাদ্রাজ পুরনিগম এটি চালু করে।
-
২০২২ সালে পূর্ব দিল্লি পুরনিগমও ট্রি-অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা শুরু করেছিল।
-
যদিও এটি কলকাতা পুরনিগমের (KMC) প্রথম উদ্যোগ, তবে রাজ্যে বন দফতরের কাছে তাদের আওতাভুক্ত এলাকার গাছের পরিচর্যার জন্য এই ধরনের অ্যাম্বুল্যান্স রয়েছে।
পরিষেবার প্রয়োজনীয়তা:
কলকাতা পুরনিগম কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কালবৈশাখী বা প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে শহরে প্রায়শই গাছের ক্ষতি হয়। কিন্তু আগে ক্ষতিগ্রস্ত সেই সব গাছের সরকারিভাবে প্রয়োজনীয় পরিচর্যা করার পরিকাঠামো ছিল না, ফলে অনেক সময় উপড়ে যাওয়া গাছ কেটে ফেলা ছাড়া উপায় থাকত না। এবার সেই সমস্যা মিটলো।
পুরো কলকাতা শহর জুড়ে গাছের পরিচর্যা করবে এই অ্যাম্বুল্যান্স। চালক-সহ চারজনের একটি দল এই পরিষেবা দেবে। মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার বলেন, “এই অ্যাম্বুল্যান্সের মূল কাজ গাছের পরিচর্যা করা। এখন মূলত রাস্তার ধারে ও সরকারি বিভিন্ন জায়গার গাছের পরিচর্যার জন্য ব্যবহার করা হবে এটি। তামিলনাড়ুতে প্রথম শুরু হয়েছিল, এবার কলকাতাতেও শুরু হলো।”
ট্রি অ্যাম্বুল্যান্সের ভেতরের সরঞ্জাম:
কর্পোরেশন সূত্রে খবর, এই অ্যাম্বুল্যান্সে গাছ পরিচর্যার জন্য অত্যাবশ্যকীয় সব সরঞ্জাম মজুত রয়েছে:
| সরঞ্জাম | ব্যবহার/কার্যকারিতা |
| পাওয়ার শ’ মেশিন | গাছের ডালপালা কাটতে ব্যবহার হয়। |
| হেজ কার্টিং মেশিন | গাছকে সুন্দর করে নির্দিষ্ট আকার (শেপ) দিতে কাজে লাগবে। |
| ব্রুশ কাটার মেশিন | গাছ লাগানোর জন্য গর্ত তৈরি করতে। |
| স্প্রে মিশন | সার ও কীটনাশক স্প্রে করতে। |
| জেনারেটর | সমস্ত যন্ত্রপাতি চালানোর জন্য বৈদ্যুতিক সরবরাহ নিশ্চিত করবে। |
| জৈব সার ও নানা ধরনের ওষুধ | গাছের পরিচর্যা ও চিকিৎসার জন্য। |
| জলের ব্যবস্থা |
কলকাতা কর্পোরেশনের তত্ত্বাবধানে একটি সংস্থা এই ট্রি অ্যাম্বুল্যান্সটি পরিচালনা করবে। পুরনিগমের কন্ট্রোল রুমে ফোন করে যে কেউ গাছের ছোট-বড় সমস্যা নিয়ে অভিযোগ জানাতে পারবেন। বিশেষ করে ঝড় পরবর্তী শহরে এই পরিষেবা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় বলে মনে করছেন উদ্যান বিভাগের আধিকারিকেরা। এটি গাছের প্রাণ রক্ষা করতে সাহায্য করবে।