বাস্তবের ঘটনা যেন সিনেমাকেও হার মানালো! রাজ্য জুড়ে চলা বিশেষ নিবিড় সংশোধন প্রক্রিয়া (SIR) বা ভোটার তালিকা সংশোধনের সৌজন্যে পুরুলিয়ার রঘুনাথপুর ২ নম্বর ব্লকের গোবরান্দা গ্রামে ৩৭ বছর পর ফিরে পেলেন হারিয়ে যাওয়া পরিবারের সদস্যকে। এই অলৌকিক পুনর্মিলন সম্ভব হয়েছে গ্রামেরই বুথ লেভেল অফিসার (BLO) এবং ছোট ছেলে প্রদীপ চক্রবর্তীর কাজের মাধ্যমে।
দাদার খোঁজ মিলল যেভাবে
-
বিএলও-র নম্বর: SIR প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর যখন সবাই ‘শিকড়ের খোঁজ’ চালাচ্ছেন, ঠিক সেভাবেই দমদম, কলকাতা থেকে বিবেক চক্রবর্তীর এক ছেলে তাঁর গ্রামের বিএলও-র মোবাইল নম্বর জোগাড় করেন।
-
তথ্যের সন্ধান: বিবেকের পরিবার বিএলও প্রদীপ চক্রবর্তীর কাছে ২০০২ সালের ভোটার তথ্য ফর্মের (EF) বিবরণ জানতে চায়।
-
পরিচয় প্রকাশ: তথ্য দিতে গিয়ে প্রদীপ চক্রবর্তী বুঝতে পারেন, বিবেক আসলে তাঁরই নিজের দাদা! প্রদীপ জানতেন না যে তাঁর ভাইপো তাঁকে ফোন করেছেন। পরিবারের সদস্যের নাম শুনেই তিনি বুঝতে পারেন।
-
ছোট ভাইয়ের আবেগ: প্রদীপ জানিয়েছেন, “আমি বলি, আমি স্যর নই, তোমার কাকা। ১৫ মিনিট আর কথা বলতে পারিনি দুজনে।” একথা বলতে গিয়ে তাঁর গলা ভারি হয়ে আসে।
অভিমানে বাড়ি ছেড়েছিলেন দাদা
প্রদীপ চক্রবর্তী জানান, তাঁর দাদা ১৯৮৮ সালের পর কোনও এক অভিমানে বাড়ি ছেড়েছিলেন। অনেক খোঁজ করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।
৩৭ বছর পরে দুই ভাইয়ের মধ্যে যোগাযোগ হওয়ায় চক্রবর্তী পরিবারে এখন খুশির হাওয়া। পরিবারের সদস্যরা বলছেন, নির্বাচন কমিশনের জন্যই তাঁরা হারিয়ে-যাওয়া সদস্যকে ফিরে পেলেন। এই কাজের জন্য ভাই প্রদীপ নির্বাচন কমিশনকে ধন্যবাদও জানিয়েছেন। ফোনে কথা হওয়ার পর এবার দুই ভাইয়ের দেখা হওয়ার অপেক্ষা।