২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলার রাজনীতিতে উঠল নতুন বিতর্কের ঝড়। তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress)-এর সাংসদ জগদীশ বসুনিয়া প্রকাশ্যেই বিস্ফোরক মন্তব্য করে দাবি করেছেন, আগামী নির্বাচনে বুথে কোনো বিজেপি এজেন্ট থাকতে দেওয়া হবে না। তাঁর এই মন্তব্যে রাজনৈতিক মহলে তীব্র তোলপাড় শুরু হয়েছে।
“যে ওষুধ দরকার, সেটাই দিতে হবে”
দলীয় বিজয়া সম্মিলনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে জগদীশ বসুনিয়া তাঁর এই বিতর্কিত বার্তা দেন। সরাসরি দলীয় কর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “এর জন্য যে ওষুধ প্রয়োগ করতে হয়, তাই করতে হবে। কোথাও কোনো এজেন্ট বসবে না।”
তিনি তৃণমূল কর্মীদের নির্দেশ দেন: “এখন থেকেই খুঁজে বের করুন কে কে বুথে বিজেপির এজেন্ট হতে চায়। তাঁকে মেপে নিন। যে ওষুধ প্রয়োগ করা দরকার সেই ওষুধই দিতে হবে যাতে কেউ বিজেপির এজেন্ট হয়ে বসতে না চায়।”
‘ক্যানসারের জন্য কেমো’: চরম হুঁশিয়ারি সাংসদের
সাংসদ জগদীশ বসুনিয়া শুধু মুখেই নয়, রীতিমতো হুঙ্কারের সুরে কর্মীদের বার্তা দেন। তিনি চিকিৎসার উপমা টেনে বলেন, “যেখানে যে ওষুধ দরকার সেটা দেবেন। ক্যানসারের জন্য কেমো থেরাপি দরকার, ওখানে ট্যাবলেট, স্যালাইন দিলে হবে না। কেমো দিতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “পেটে পাথর হলে কেটে অপারেশন করে পাথর বের করতে হবে। হাতে-পায়ে গ্যাংরিন হলে সেই জায়গাটা কেটে বাদ দিতে হয়, নাহলে ঘা ছড়াবে। আগামীদিনে এলাকায় তৃণমূল কংগ্রেসকে শক্তিশালী রাখতে হলে আমাদের সেই কাজই করতে হবে।”
২০২৬-এর আগে ‘আমি তোমার সঙ্গে আছি’
জগদীশ বসুনিয়া কর্মীদের আরও নির্দেশ দেন: “আগামীকাল থেকে সব বুথে খবর নেবেন। কারা কারা বিজেপি করতে চাইছে, কারা ২০২৬-এর নির্বাচনে বিজেপির বুথ এজেন্ট হতে চায়, এত বড় সাহস কার আছে, সেই খবর নেবেন। ২০২৬ সালের আগে যেন সে বলে আমি আর বিজেপির পোলিং এজেন্ট হব না। আমি তোমার সঙ্গে আছি। তার জন্য যা যা করা দরকার, তা করবেন।”
উল্লেখ্য, সম্প্রতি তৃণমূলের আরও নেতা, যেমন বীরবাহা হাঁসদা এবং মনোজ তিওয়ারির বক্তব্যতেও হুঙ্কারের সুর শোনা গিয়েছিল। বীরবাহা হাঁসদা বাংলায় কেবল তৃণমূলের থাকার কথা বলেছিলেন, আর মনোজ তিওয়ারি ‘বদলা হবে ছাব্বিশে’ বলে মন্তব্য করেছিলেন। এই নেতাদের হুঙ্কার দেওয়ার তালিকায় এবার নতুন সংযোজন হলেন জগদীশ বসুনিয়া। তাঁর ‘ওষুধ প্রয়োগ’ এবং ‘কেমোথেরাপি’র মতো মন্তব্য ঘিরে রাজ্য রাজনীতিতে তীব্র উত্তেজনা তৈরি হয়েছে।