কুলতলি (দক্ষিণ ২৪ পরগনা): উৎসবের রাতে যখন দিকে দিকে সাড়ম্বরে পূজিতা হচ্ছেন দেবী, ঠিক তখনই দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলিতে ঘটল এক নারকীয় ঘটনা। অভিযোগ, ৬০ বছর বয়সী এক প্রৌঢ়াকে গণধর্ষণ করেছে তিন দুষ্কৃতী। ঘটনার প্রেক্ষিতে পুলিশ ইতিমধ্যেই ২ জনকে গ্রেফতার করেছে, তবে আরও একজন অভিযুক্ত এখনও পলাতক বলে পুলিশ সূত্রে দাবি।
নির্যাতিতা প্রৌঢ়ার অভিযোগ, মঙ্গলবার গভীর রাতে তাঁর বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে স্থানীয় তিন যুবক জোর করে ঘরে প্রবেশ করে। এরপরই বন্দুক, পিস্তল ও বঁটি দেখিয়ে তাঁকে ভয় দেখানো হয়। তাঁর দাবি, “আমার গলার কাছে বন্দুক আর পিস্তল ঠেকিয়ে বলল, আওয়াজ করলে তোমায় কেটে দু’টো করে দেব।” এরপরেই আগ্নেয়াস্ত্রের মুখে তাঁকে নির্মম অত্যাচার করা হয়। নির্যাতিতার ভাইপো জানান, তাঁর পিসির পেটে টিউমার রয়েছে এবং এই আক্রমণের পর তিনি যন্ত্রণায় ছটফট করছেন।
গণধর্ষণ, ধৃতদের গণপিটুনি ও পুলিশি পদক্ষেপ
বৃদ্ধার চিৎকার শুনে স্থানীয়দের একাংশ দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। তাঁরা হাতে নাতে ২ জন অভিযুক্তকে ধরে ফেললেও একজন পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। এরপর ক্ষুব্ধ জনতা ধৃত ২ যুবককে ল্যাম্প পোস্টে বেঁধে মারধর করেন। পরে কুলতলি থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
পুলিশ মহিলার অভিযোগের ভিত্তিতে আরশেদ মোল্লা এবং পিন্টু হালদার নামের ২ জনকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশ সূত্রে খবর, তাদের বিরুদ্ধে গণধর্ষণের মামলা রুজু করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার ধৃতদের বারুইপুর আদালতে তোলা হয়। পলাতক তৃতীয় অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।
আইনশৃঙ্খলা নিয়ে তুঙ্গে রাজনৈতিক চাপানউতোর
কুলতলির এই নৃশংস ঘটনা সামনে আসতেই রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে ফের একবার সরব হয়েছে বিজেপি। বিজেপি জয়নগর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি উৎপল নস্কর সরাসরি রাজ্যের শাসকদলকে কটাক্ষ করে বলেছেন, “নিরাপত্তা কোথায়? ধিক্কার জানাই সরকারকে।”
পাল্টা উত্তর দিয়েছেন কুলতলির তৃণমূল বিধায়ক গণেশচন্দ্র মণ্ডল। তিনি বলেন, দুষ্কৃতীদের কোনো রাজনৈতিক রঙ হয় না। তিনি জানান, ২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং পলাতক অভিযুক্তকে দ্রুত গ্রেফতারের আশ্বাস দিয়েছে পুলিশ। দোষীদের সর্বোচ্চ সাজার দাবিও জানিয়েছেন তিনি।
কুলতলির এই ঘটনা নিয়ে আপনার কী মত? কমেন্টে জানান 👇