শিশুমৃত্যুকে কেন্দ্র করে চরম উত্তেজনা ছড়াল পূর্ব মেদিনীপুরের এগরা মহকুমা হাসপাতালে। মঙ্গলবার সাতসকালে জনরোষের মুখে পড়ে আক্রান্ত হলেন এক পুলিশ কর্মী। তাঁর উর্দি ছিঁড়ে দেওয়া হয়েছে এবং তাঁকে রাস্তায় ফেলে বেধড়ক মারা হয়েছে বলে অভিযোগ। বারবার কেন রাজ্যে পুলিশকে জনরোষের মুখে পড়তে হচ্ছে, সেই প্রশ্ন উঠছে বিভিন্ন মহলে।
চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ:
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার ভোরবেলায় অসুস্থ শরীর নিয়ে এক শিশুকে এগরা মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু চিকিৎসায় গাফিলতির কারণে শিশুটির মৃত্যু হয়েছে বলে পরিবারের অভিযোগ। এরপরই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সকাল থেকে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন নিহত শিশুর পরিবার ও স্থানীয়রা।
পুলিশ কর্মীর ওপর হামলা:
পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। বিক্ষোভ নিমেষে সংঘর্ষে পরিণত হয় এবং বিক্ষুব্ধ জনতা হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্সের উপর চড়াও হয়। এরপরই পরিস্থিতি সামাল দিতে ছুটে যায় স্থানীয় এগরা থানার পুলিশ। উল্লেখ্য, মহকুমা হাসপাতাল থেকে এগরা থানার দূরত্ব মাত্র দু’কিলোমিটার।
কর্তব্যরত পুলিশ কর্মী ঘটনাস্থলে পৌঁছতেই বিক্ষুব্ধ জনতা ক্ষোভ উগরে দেয় তাঁর উপর। তিনি জনতাকে থামানোর চেষ্টা করতেই তাঁর উপর চড়াও হয় বিক্ষোভকারীরা। প্রথমে উর্দি ধরে টান, তারপর এলোপাথাড়ি থাপ্পড়। ওই পুলিশ কর্মীকে রাস্তায় ফেলে বেধড়ক পেটানো হয় এবং তাঁর উর্দি ছিঁড়ে দেওয়া হয়।
অভিযুক্তরা পলাতক, তীব্র নিন্দা:
ইতিমধ্যে এগরা থানার পুলিশ এসে আহত পুলিশ কর্মীকে উদ্ধার করে নিয়ে গেলেও, এই ঘটনায় কোনও অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা যায়নি। স্থানীয় সূত্রে খবর, পুলিশ কর্মীকে পিটিয়ে হামলাকারীরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে গিয়েছে।
এই ঘটনা প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা সজল ঘোষ বলেন, “উর্দি আক্রান্ত হচ্ছে কারণ, ওরা সম্মান রাখতে পারেনি। তবে আমার উর্দি আক্রান্ত হয়েছে, এর চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ শিশুমৃত্যু। এ রাজ্যে বেঁচে থাকাটা কঠিন। কী কারণে এমন ঘটল সেই বিষয়ে তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।” এই ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।