রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের আবহে এক নজিরবিহীন ও বিস্ফোরক দাবি করে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে শোরগোল ফেলে দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সোমবার ফ্লোরিডার মার-আ-লাগো রিসর্টে ইজরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকের ঠিক আগে ট্রাম্প জানান, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের একটি ব্যক্তিগত বাসভবন লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন। খোদ পুতিনই নাকি ফোনে ট্রাম্পকে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন।
ট্রাম্পের দাবি অনুযায়ী, সোমবার ভোরে পুতিনের সঙ্গে তাঁর ফোনে দীর্ঘ কথা হয়। সেখানেই পুতিন জানান, ইউক্রেনের একঝাঁক ড্রোন তাঁর বাসভবনে আঘাত করার চেষ্টা করেছিল। ট্রাম্প বলেন, “পুতিন নিজেই আমাকে জানিয়েছেন যে তাঁর ওপর হামলার চেষ্টা হয়েছে। এটি অত্যন্ত নিন্দনীয় ঘটনা। যুদ্ধের ময়দানে লড়াই আর কারো ব্যক্তিগত বাসভবনে হামলা এক বিষয় নয়। আমি এই ঘটনায় সত্যিই ক্ষুব্ধ।” যদিও নিজের স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে ট্রাম্প যোগ করেছেন যে, এই অভিযোগের সত্যতা নিয়ে তিনি নিশ্চিত নন—ঘটনাটি সাজানো হওয়ার সম্ভাবনাও তিনি উড়িয়ে দেননি।
ইতিমধ্যেই রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ দাবি করেছেন, গত ২৮ ও ২৯ ডিসেম্বর নোভগোরদ অঞ্চলে পুতিনের একটি আবাসন লক্ষ্য করে প্রায় ৯১টি দীর্ঘপাল্লার ড্রোন পাঠিয়েছিল ইউক্রেন। যদিও রুশ আকাশ প্রতিরক্ষা বাহিনী সেই হামলা রুখে দিয়েছে বলে মস্কোর দাবি। অন্যদিকে, এই অভিযোগকে ‘রাশিয়ার সাজানো প্রোপাগান্ডা’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হলো, মাত্র ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে দু’বার পুতিনের সঙ্গে কথা বলেছেন ট্রাম্প। এর আগে তিনি জেলেনস্কির সঙ্গেও বৈঠক করেছেন। ট্রাম্পের দাবি, পুতিনের সঙ্গে তাঁর আলোচনা অত্যন্ত ‘ফলপ্রসূ’ হয়েছে এবং কিছু স্পর্শকাতর ইস্যু মিটে গেলেই শান্তি ফিরবে। তবে শান্তির এই বার্তার মধ্যেই পুতিন তাঁর বাহিনীকে জাপোরিঝিয়া দখলের গতি বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন, যা যুদ্ধের ভয়াবহতা কমার লক্ষণ দেখাচ্ছে না। ট্রাম্পের এই মধ্যস্থতা কি আদেও যুদ্ধের অবসান ঘটাবে নাকি নতুন কোনো বিতর্কের জন্ম দেবে, এখন সেটাই দেখার।