দেশের বিমানবাহিনী প্রধান এপি সিং ৯৩তম এয়ার ফোর্স ডে উদযাপনের অনুষ্ঠানে ‘অপারেশন সিঁদুর’ (Operation Sindoor) প্রসঙ্গে ফের গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করলেন। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, এই অভিযানে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ঐক্যবদ্ধতার ফলেই সাফল্য এসেছে এবং যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব এসেছিল পাকিস্তানের পক্ষ থেকেই।
পাকিস্তানকে বাধ্য করার আসল কারণ
বায়ুসেনা প্রধান এপি সিং দাবি করেন, ভারত পাকিস্তানকে এমন একটি কঠিন পরিস্থিতিতে নিয়ে গিয়েছিল, যেখান থেকে তারা শত্রুতার সমাপ্তি চেয়ে যুদ্ধবিরতির জন্য অনুরোধ করতে বাধ্য হয়েছিল।
“আমরা ওদের (পাকিস্তান) এমন একটি পর্যায়ে নিয়ে যেতে পেরেছিলাম যেখান থেকে ওরা যুদ্ধবিরতির জন্য অনুরোধ করেছিল। শত্রুতার সমাপ্তির জন্য অনুরোধ করেছিল। আমাদের আসল লক্ষ্য পূরণ হয়েছে। তাই আমরাও রাজি হয়েছিলাম যুদ্ধ বন্ধ করতে।”
অফেন্সিভ অ্যাকশনের কৌশল ও ক্ষয়ক্ষতি
এয়ার মার্শাল সিং এই অভিযানকে ভারতীয় সেনার চলতি বছরের সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ অভিযান বলে ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি জানান, ভারতীয় বিমানবাহিনী সুনির্দিষ্ট বিমান হামলা চালিয়ে পাকিস্তান এবং পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরের জঙ্গি পরিকাঠামোগুলিই লক্ষ্য করেছিল।
গভীর হামলা: ভারত দূর পাল্লার ক্ষেপনাস্ত্র ব্যবহার করে পাক ভূখণ্ডের প্রায় ৩০০ কিমি পর্যন্ত ভেতরে ঢুকে হামলা চালিয়েছে।
জঙ্গি ক্ষয়ক্ষতি: নয়টি ক্যাম্পে ভারতের হামলায় ১০০ জনেরও বেশি জঙ্গির মৃত্যু হয়েছে।
বিমান ধ্বংস: পাকিস্তান সমানে মিথ্যাচার করলেও, ভারত নিশ্চিত করেছে যে অন্তত ৪ থেকে ৫টি হাই-টেক ফাইটার জেট, যার মধ্যে আমেরিকার F-16 রয়েছে, এবং একটি AWACS (নজরদারি বিমান) ধ্বংস করা হয়েছে।
সামরিক ক্ষয়ক্ষতি: এপি সিং আরও জানান, চারটি রাডার, দুটি কমান্ড সেন্টার, একটি হ্যাঙ্গার, একটি C-130 ক্লাস ট্রান্সপোর্ট এয়ারক্রাফট, তিন থেকে চারটি ফাইটার এবং একটি SAM সিস্টেমও ধ্বংস করা হয়েছে।
গেম চেঞ্জার ছিল সম্মিলিত শক্তি
বায়ুসেনা প্রধান স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, ভারতীয় সেনাবাহিনীর ঐক্যবদ্ধতাই এই অভিযানের আসল ‘গেম চেঞ্জার’ ছিল।
“তিনটি পরিষেবা – সেনাবাহিনী, নৌসেনা, বিমান বাহিনীর সম্পদ একত্রিত হওয়া – এবং বিমান প্রতিরক্ষা সম্পদ, কাউন্টার ইউএভি সম্পদ এবং সবকিছু আইএএফ কমান্ড এবং কন্ট্রোল সেন্টারের একত্রিত নিয়ন্ত্রণের অধীনে কাজ করা, এটি একটি গেম চেঞ্জার হিসাবে কাজ করেছে।”
এয়ার মার্শাল সিং আরও বলেন, স্যাটেলাইট চিত্রগুলি দেখিয়েছে যে ভারত এমন সব আঘাত অর্জন করেছে, যা পাকিস্তান তার নিজস্ব ভূখণ্ডের মধ্যেও পরিচালনা করতে পারত না।