বঙ্গ বিধানসভা নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই রাজ্যের রাজনীতিতে পারদ চড়ছে। এই পরিস্থিতিতে ফের স্বমহিমায় ফিরে এলেন বীরভূমের দাপুটে তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল। এবার তাঁর মুখে দলীয় কর্মীদের জন্য নয়া নিদান—’অন্ধকার গপ করে গিলে নেবে।’ মূলত ভোটের আগে দলবদলের টোপ থেকে কর্মীদের সতর্ক করতেই যে তিনি এই কঠোর বার্তা দিয়েছেন, তা স্পষ্ট।
সোমবার বিকেলে খয়রাশোল ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস আয়োজিত এক বিজয়া সম্মিলনী সভায় যোগ দেন অনুব্রত। সেখানে বক্তব্য রাখতে উঠে তিনি দলের কর্মীদেরকে ‘হুজুগে কান না দেওয়ার’ পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, “হুজুগে কান দেবেন না, নিজের পায়ে কুড়ুল মারবেন না। সাময়িক ভাল লাগবে কিন্তু পরে নেমে আসবে ভয়ঙ্কর অন্ধকার। আর সেই অন্ধকার গপ করে গিলে নেবে।” রাজনৈতিক মহল মনে করছে, ভোটের আগে দলবদলের ট্রেন্ড রুখতে এবং প্রলোভনে পড়ে অন্য দলে যাওয়া আটকাতেই ‘কেষ্ট’ কর্মীদের এই নিদান দিয়েছেন।
কর্মীদের উজ্জীবিত করলেন ‘কেষ্ট’
ফের অনুব্রত মণ্ডলকে স্বমহিমায় ফিরে পেয়ে বীরভূমের তৃণমূল কর্মীরা বেশ উজ্জীবিত। কর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “আমরা সাধারণ মানুষের জন্য এসেছি। খেটে খাওয়া মানুষ, দিনমজুর, কৃষক, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, বেকার ছেলে-মেয়েদের জন্য। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোনও হড় ঘরের মেয়ে নন। তিনি বীরভূমেরই সাধারণত পরিবারের সন্তান। তাই ৯৪টি জনকল্যাণমূলক প্রকল্প করেছেন সাধারণ মানুষের জন্য।”
২০২৬ সালের নির্বাচনের জন্যও দলীয় কর্মীদের নিজস্ব টিপস দিয়েছেন তিনি। অনুব্রতর কথায়, “২৬-এর ভোট কঠিন কিন্তু ভয়ের নয়। সকলে মিলে কাজ করলে জয় নিশ্চিত। লোকসভায় ৪ হাজার ৭০০ ভোটে লিড ছিল। এবার সেটিকে ১৫ হাজারে নিয়ে যেতে হবে।” কালীপুজোর পর থেকেই প্রতিটি বুথে সাংগঠনিক প্রস্তুতি নেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
এছাড়াও, তিনি কর্মীদের ভোটার তালিকা (SIR) নিয়ে অভয় দিয়ে বলেন, “ভয় পাবেন না, আমাদের ভোটার লিস্টের নম্বর কেটে দিয়ে পারবে না। আমরা অন্যায় করি না, রুখে দাঁড়াব একসঙ্গে।” এদিনের সভায় অনুব্রত মণ্ডলের পাশেই দেখা যায় বিধায়ক সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা এবং জেলা তৃণমূলের কোর কমিটির সদস্য সুদীপ্ত ঘোষ সহ অন্যান্য নেতৃত্বকে।