পৃথিবীতে আগত সব শিশু পূর্ণ সময় ধরে মাতৃগর্ভে থাকতে পারে না। যেসব শিশু ৩৭ সপ্তাহ পূর্ণ হওয়ার আগেই জন্ম নেয়, তাদের প্রিম্যাচিওর শিশু বলা হয়। চিকিৎসকদের মতে, সময়ের আগে জন্ম নেওয়া শিশুর ক্ষেত্রে নানা ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকে, যা অনেক সময় শিশুর মৃত্যু পর্যন্ত ঘটাতে পারে। বিশ্বজুড়ে প্রতি বছর ১০ লাখের বেশি শিশুর মৃত্যু হয় সময়ের আগে জন্ম নেওয়ার কারণে। যারা বেঁচে থাকে, তাদেরও চোখ, কান বা মস্তিষ্কের মতো অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে সমস্যা দেখা দিতে পারে।
প্রিম্যাচিওর হওয়ার কিছু কারণ:
প্রথম সন্তান যদি সময়ের আগে ভূমিষ্ঠ হয়, তবে পরবর্তী সন্তানের ক্ষেত্রেও এমনটা হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
গর্ভবতী মায়ের কোনো জটিল সংক্রমণ দেখা দিলে।
শারীরিক আঘাত লাগলে অথবা যদি জরায়ু থেকে প্লাসেন্টা ছিঁড়ে যায়।
গর্ভের অ্যামনিওটিক ফ্লুইডের পরিমাণ কমে গেলে।
হবু মায়ের উচ্চ রক্তচাপ বা ডায়াবেটিস অনিয়ন্ত্রিত হলে।
প্রিম্যাচিওর শিশুর জন্মের লক্ষণসমূহ:
ঘন ঘন পেটে চাপ ধরা বা ব্যথা অনুভব করা।
একটানা কোমর ব্যথা।
তলপেটে মোচড় দিয়ে ব্যথা।
যোনিপথে রক্তপাত।
সচরাচরের চেয়ে ভিন্ন ধরনের সাদাস্রাব।
এ ধরনের উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করা জরুরি। অনেক সময় উপসর্গ না থাকলেও প্রিম্যাচিওর শিশুর জন্ম হতে পারে, সেক্ষেত্রে চিকিৎসকরাই আগে থেকে সতর্ক করে থাকেন।
প্রিম্যাচিওর শিশু ও মায়ের যত্ন:
প্রিম্যাচিওর শিশুদের জন্মের পর হাসপাতালে চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে কিছুদিন থাকা জরুরি। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেও নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
শিশুর শ্বাসকষ্ট বা দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার কারণে ঘন ঘন সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে। তাই তাদের বিশেষ যত্ন ও চিকিৎসা প্রয়োজন হয়।
শিশুর পাশাপাশি মায়ের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের দিকেও খেয়াল রাখা দরকার। সন্তানকে নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও মাকে কোনোভাবেই মানসিক চাপে রাখা যাবে না।
সচেতনতা এবং সঠিক যত্নই প্রিম্যাচিওর শিশু এবং তার মায়ের সুস্থ জীবন নিশ্চিত করতে পারে।