মসুর ডাল শুধু সুস্বাদুই নয়, এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিগুণ। যেমন, খনিজ পদার্থ, আঁশ, খাদ্যশক্তি, আমিষ, ক্যালসিয়াম, লৌহ, ক্যারোটিন, ভিটামিন বি-২ ও শর্করা ইত্যাদি। মসুর ডালে উচ্চ মাত্রার দ্রবণীয় ফাইবার থাকে। পুষ্টিবিদদের মতে, প্রতি ১০০ গ্রাম মসুর ডালে থাকে জলীয় অংশ: ১২.৪ গ্রাম, খনিজ পদার্থ: ২.১ গ্রাম, আঁশ: ০.৭ গ্রাম, খাদ্য শক্তি: ৩৪৩ কিলো ক্যালরি, আমিষ: ২৫.১ গ্রাম, চর্বি: ০.৭ গ্রাম, ক্যালসিয়াম: ৬৯ মিলিগ্রাম, লৌহ: ৪.৮ মিলিগ্রাম, ক্যারোটিন: ২৭০ মাইক্রোগ্রাম, ভিটামিন বি-২: ৪৯ মিলিগ্রাম, শর্করা: ৫৯.০ গ্রাম।
মসুর ডালের অসংখ্য উপকারিতা রয়েছে, যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
হজমে সহায়তা ও কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ
মসুর ডালে প্রচুর পরিমাণে খাদ্য আঁশ রয়েছে, ফলে এটি হজমে সহায়তা করে। এছাড়াও কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধের জন্য মসুর ডাল একটি আদর্শ খাবার। হজম স্বাভাবিক থাকায় শরীর সুস্থ ও সবল থাকে।
হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি হ্রাস
মসুর ডালে উচ্চ মাত্রার দ্রবণীয় ফাইবার থাকে, যা রক্তের কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। এটা শরীরের কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি কমিয়ে দেয়। ধমনীকে পরিষ্কার রাখে ফলে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক থাকে। মসুর ডালের মতো উচ্চ ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খেলে হার্টের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়। তাছাড়া মসুর ডালে ফলেট এবং ম্যাগনেসিয়াম আছে, যা হার্টকে ঠিক রাখতে সহায়তা করে। ম্যাগনেসিয়াম শরীরের সর্বত্র রক্ত, অক্সিজেন এবং পুষ্টি প্রবাহ করতে সাহায্য করে।
ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ
মসুর ডালের ফাইবারের অনেক উপকারিতা রয়েছে। মসুর ডাল শরীরে চিনির পরিমাণ কমিয়ে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে। তাছাড়া এটি উচ্চ রক্তচাপ কমাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
ওজন কমাতে সহায়ক
যারা শরীরের বাড়তি ওজন কমাতে চান, তারা ভাতের পরিমাণ কমিয়ে তার বদলে নিয়মিত ডাল খেতে পারেন। এটি ওজন কমানোর একটি সহজ ও স্বাস্থ্যকর উপায়। এছাড়াও মসুর ডাল খারাপ কোলেস্টেরলকে কমিয়ে বাড়িয়ে দেয় ভালো কোলেস্টেরলের পরিমাণ।
গর্ভবতী মায়েদের জন্য উপকারী
যারা সন্তানসম্ভবা তাদের জন্য মসুর ডাল খুবই উপকারী। ডালে একসঙ্গে আয়রন ও ফলেট দুটিই থাকে, যা গর্ভবতী মায়েদের শরীরের জন্য অত্যন্ত জরুরি। সেই সঙ্গে আয়রন রক্তশূন্যতা প্রতিরোধে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে।
সৌন্দর্যচর্চায় মসুর ডাল
মসুর ডাল সৌন্দর্যচর্চার জন্য সবচেয়ে ঘরোয়া ও কার্যকরী উপায়। মসুর ডালের প্যাক লাগিয়ে ত্বকের যত্ন নেওয়া যায় এবং হয়ে ওঠা যায় কোমল ও সুন্দর ত্বকের অধিকারী। দীর্ঘদিন যদি নিয়ম মেনে মুখে মসুরের ডালের প্যাক লাগান, তাহলে সহজেই আপনার মুখের কালো ছাপটা দূর হয়ে যাবে।