গরমকালে পাকস্থলীর সংক্রমণ একটি গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা। দূষিত জল বা খাবার কিংবা সংক্রামিত ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে এই রোগের ঝুঁকি বাড়ে। বমি বমি ভাব, বমি, ডায়রিয়া, পেট ফাঁপা এবং পেটে ব্যথা এর প্রাথমিক লক্ষণ। সংক্রমণ হলে পুরো শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে এবং হজম ব্যবস্থা কার্যত অকেজো হয়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে খাওয়ার ইচ্ছে চলে গেলেও শরীরের পুষ্টি এবং শক্তি ফিরে পেতে কিছু খাবার গ্রহণ করা জরুরি। তবে সব খাবার হজম না হওয়ায়, স্বাস্থ্যসম্মত, পুষ্টিকর এবং প্রাকৃতিক খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
কোন খাবারগুলো দ্রুত সুস্থ হতে সাহায্য করবে?
পাকস্থলীর সংক্রমণে শরীরকে দ্রুত সুস্থ করে তুলতে কয়েকটি খাবার অত্যন্ত উপকারী। নিচে তেমনই কিছু খাবারের তালিকা দেওয়া হলো:
কলা: পেটের সংক্রমণে কলা এক অপরিহার্য ফল। এটি সহজে হজম হয়। বমি এবং ডায়রিয়ার কারণে শরীর থেকে যে পটাশিয়াম বেরিয়ে যায়, কলা তা পুনরুদ্ধার করতে সাহায্য করে। এছাড়া, এটি পেটের আস্তরণকে শক্তিশালী করে এবং ক্ষতিগ্রস্ত অন্ত্র নিরাময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কলায় থাকা পেকটিন অন্ত্রের অতিরিক্ত তরল শোষণ করে মলকে শক্ত করে এবং ডায়রিয়া সারাতে সাহায্য করে।
ভাত: ডায়রিয়ায় সকাল-রাতে কী খাবেন, এই প্রশ্ন অনেকেরই মনে আসে। এর সহজ উত্তর হলো, এক বাটি লবণাক্ত সাদা ভাত। এতে থাকা কার্বোহাইড্রেট শরীরকে প্রয়োজনীয় শক্তি যোগায়। জটিল কার্বোহাইড্রেটগুলো বমির কারণে শরীর থেকে বেরিয়ে যাওয়া পুষ্টি ফিরিয়ে আনে, ফলে শরীর খুব বেশি দুর্বল হয় না। এই সময় ভাতে নুন ছাড়া অন্য কোনো মশলা এড়িয়ে চলা উচিত।
ডাবের জল: পাকস্থলীর সংক্রমণের পর সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো ডিহাইড্রেশন বা জলশূন্যতা। শরীরে তরলের অভাব পূরণ করা এই সময় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শরীরকে রিহাইড্রেট করার জন্য ডাবের জল একটি চমৎকার পানীয়। এতে আলাদা করে চিনি যোগ করার প্রয়োজন হয় না, কারণ এটি ইলেকট্রোলাইটের প্রাকৃতিক উৎস। ডাবের জলে পটাশিয়াম ছাড়াও সোডিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ফসফরাসের মতো গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান থাকে।
দই: পেট খারাপ নিরাময়ে দই আরেকটি দারুণ খাবার। এটি প্রোটিনের একটি সমৃদ্ধ উৎস এবং রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল রাখতে এর জুড়ি নেই। এছাড়াও, দই অন্ত্রের উপকারী ব্যাকটেরিয়া নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, যা হজম প্রক্রিয়াকে স্বাভাবিক করতে সহায়ক।