স্বাস্থ্য সচেতন ব্যক্তিরা প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় ডিম ও দুধকে প্রাধান্য দেন। সকালে নাস্তায় বা রাতে ঘুমানোর আগে এক গ্লাস দুধ পান করা অনেকেরই অভ্যাস। যারা জিমে গিয়ে পেশী গঠনে (মাসল বিল্ড আপ) সচেষ্ট, তাদের অনেকে তো দুধের সঙ্গে কাঁচা ডিম মিশিয়েও খেয়ে থাকেন। নিঃসন্দেহে এই দুটি খাবারই স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। তবে, ডিম আর দুধ একসঙ্গে খেলে শরীরের ওপর কী প্রভাব পড়ে, তা নিয়ে নানা বিতর্ক বিদ্যমান এবং অনেকেরই এ বিষয়ে সঠিক ধারণা নেই।
উপকারী হলেও একসঙ্গে গ্রহণে সতর্কতা:
ডিম ও দুধ উভয়ই হেলদি ফ্যাট, উচ্চমানের প্রোটিন, অ্যামিনো অ্যাসিড এবং ক্যালসিয়ামে পরিপূর্ণ, যা শরীর ও মস্তিষ্কের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তবে, পুষ্টিবিদরা বলছেন, এই দুটি উচ্চ প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার একসঙ্গে খেলে কিছু স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিতে পারে, বিশেষ করে যাদের হজমজনিত সমস্যা আছে।
যেসব সমস্যা হতে পারে:
- হজমের সমস্যা: আয়ুর্বেদ মতে, একসঙ্গে দুই রকম প্রোটিন খেলে হজমে সমস্যা হতে পারে। এর ফলে পেট ফুলে থাকা, অস্বস্তি, পেটে ব্যথা, এমনকি ডায়রিয়াও হতে পারে।
- ত্বকের ইনফেকশন: কিছু ক্ষেত্রে ত্বকেও ইনফেকশন দেখা দিতে পারে।
- সালমোনেলা ও ফুড পয়জনিং: বিশেষজ্ঞরা বিশেষভাবে সতর্ক করেছেন দুধের সঙ্গে কাঁচা ডিম মিশিয়ে না খাওয়ার জন্য। কাঁচা ডিমে সালমোনেলা (Salmonella) নামক ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে, যা ফুড পয়জনিং ঘটাতে পারে। দুধ ও কাঁচা ডিম একসঙ্গে খেলে এই ঝুঁকির পাশাপাশি বায়োটিনের ঘাটতিও হতে পারে।
- কোলেস্টেরলের ঝুঁকি: দিনের পর দিন রান্না ছাড়া ডিম-দুধ একসঙ্গে খেলে কোলেস্টেরলের ঝুঁকি বাড়তে পারে।
সঠিক উপায় ও সময়:
বেকিং বা রান্নার ক্ষেত্রে ডিম-দুধের মিশ্রণে সাধারণত কোনো পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া হয় না, কারণ উচ্চ তাপমাত্রায় ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস হয়ে যায়। কিন্তু কাঁচা অবস্থায় দুধের সঙ্গে ডিম মিশিয়ে খাওয়া সম্পূর্ণ অনুচিত।
পুষ্টিবিদদের পরামর্শ হলো, এই দুই ধরনের উচ্চ প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার একসঙ্গে না খেয়ে অন্তত এক ঘণ্টার বিরতি রাখা উচিত। এতে হজম প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হতে পারে এবং অবাঞ্ছিত স্বাস্থ্য সমস্যা এড়ানো সম্ভব।
সুতরাং, সুস্থ থাকতে দুধ ও ডিমের উপকারিতা যেমন অনস্বীকার্য, তেমনই তা গ্রহণের পদ্ধতি ও সময় সম্পর্কে সচেতন থাকা জরুরি। আপনার সুস্বাস্থ্যের জন্য সঠিক খাদ্যাভ্যাসই মূল চাবিকাঠি।