দাম্পত্য কলহের ফলে সন্তানের উপর যে প্রভাব পড়ে, জেনেনিন আর সতর্ক থাকুন

দাম্পত্য মানে ভালোবাসার এক অমোঘ বন্ধন। দাম্পত্য মানেই স্বামী-স্ত্রী দুজন মিলে নিষ্প্রাণ বাসা আর আসবাবপত্রের সমষ্টিকে একটা শান্তির ঘর বানিয়ে তোলা। একসঙ্গে স্বপ্ন দেখা, হাসি-কান্না ভাগ করে নেওয়া, সন্তানকে মানুষ করা- এরই নাম দাম্পত্য।

কিন্তু তারপরও দুটো মানুষ সবসময় সব বিষয়ে যে একমত হবেন তা কিন্তু নয়। দুজনের মানসিক গঠন যেহেতু আলাদা তাই চাহিদার ফারাক থাকাটাও খুবই স্বাভাবিক। সেই কারণেই মাঝেমাঝেই দাম্পত্যে দেখা দেয় সংকট। সংকট আর সুখ দাম্পত্যের দুই অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ।

সুখ সবার সঙ্গে ভাগ করে নিয়ে আনন্দ পাওয়া যায়। তবে ব্যক্তিগত জীবনের সংকট কয়জনই বা মুখ ফুটে বলতে পারেন? এর ফলে ঘটে যায় বিচ্ছেদ। আর বাবা-মায়ের বিচ্ছেদের ফলে সন্তানের উপর মারাত্মক প্রভাব পড়ে বলে জানিয়েছে বিশেষজ্ঞরা। চলুন তবে জেনে নেয়া যাক সে বিষয়ে-

>>> দাম্পত্যে যে ধরনের সংকটই তৈরি হোক না কেন সন্তানকে তার অংশীদার বানাবেন না। আপনাদের নিজেদের যতোই মতপার্থক্য থাকুক না কেন, আপনারা দুজন মিলিতভাবেই আপনাদের সন্তানের পৃথিবী। স্বামী বা স্ত্রীর সঙ্গে কথা কাটাকাটির সময় কখনোই সন্তানকে নিজের পক্ষে নেয়ার চেষ্টা করবেন না। সন্তান যদি আপনাদের ঝামেলা নিয়ে কোনো প্রশ্ন করে তাহলে সহজ ভাষায় দুই-একটি কথায় তাকে বিষয়টা বুঝিয়ে বলুন।

>>> যদি মনে করেন সন্তানের সামনে নিজের আবেগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন না তাহলে নিজেকে সময় দিন। যতোক্ষণ না মাথা ঠাণ্ডা হচ্ছে ততোক্ষণ স্বামী বা স্ত্রীর সঙ্গে কথা না বলে সন্তানের সঙ্গে সময় কাটান।

>>> দাম্পত্য সম্পর্ক টিকিয়ে রাখা যদি সম্ভব না হয় তখন অবশ্যই সন্তানের সঙ্গে আলোচনায় বসুন। কাউকে দোষারোপ না করে আপনাদের মতানৈক্যের কথা তাকে জানান। সঙ্গে সঙ্গে ওকে আশ্বস্ত করুন আপনাদের সম্পর্কে চিড় ধরলেও ওর প্রতি ভালোবাসায় কোনো ঘাটতি হবে না।

>>> সন্তানের হেফাজত নিয়ে যদি আদালতের দ্বারস্থ হতে হয় তাহলে খেয়াল রাখুন সন্তানের দৈনন্দিন জীবনে যেন তা কোনো প্রভাব না ফেলে। আদালত সন্তানের মতামত জানতে চাইলে ও যাতে নির্ভয়ে মনের কথা খুলে বলতে পারে সেদিকে খেয়াল রাখুন।

>>> অনেকসময় বাবা-মায়ের মধ্যে অশান্তি হলে সন্তান নিজেকে তার কারণ মনে করে আর তা নিয়ে অপরাধবোধে ভোগে। তাই অসতর্ক মুহূর্তেও নিজেদের সমস্যার সঙ্গে সন্তানকে জড়াবেন না। ওর সামনে একে অপরের চরিত্র, নিজেদের দাম্পত্য জীবনের ব্যর্থতা, শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সমালোচনা না করাই ভালো।

>>> যদি কখনো মনে হয় আপনাদের অশান্তি সন্তানের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতা তৈরি করছে, তাহলে তা আপনার সন্তানের জন্য খুব বড় সমস্যা বয়ে আনবে। সন্তান মানসিক অবসাদে ডুবে যাচ্ছে এমন মনে হলে অবশ্যই কোনো মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।bs

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy