তেঁতুল, কেবল জিভে জল আনা ফল নয়, স্বাস্থ্যের মহৌষধ!

তেঁতুল! নামটি শুনলেই জিভে জল এসে যায় অনেকের। এর টক-মিষ্টি স্বাদের জন্য এটি যেমন জনপ্রিয়, তেমনই এর পুষ্টিগুণ ও স্বাস্থ্য উপকারিতা এটিকে এক বিশেষ ফল হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছে। উচ্চমাত্রার অ্যাসিড, চিনি, ভিটামিন বি, এবং ক্যালসিয়ামে ভরপুর এই ফলটি প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকেই বিভিন্ন চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে। আধুনিক গবেষণাও তেঁতুলের অসাধারণ স্বাস্থ্য গুণাবলীর প্রমাণ দিচ্ছে।

তেঁতুলের ৭টি অসাধারণ স্বাস্থ্য উপকারিতা:
১. উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ: কাঁচা অথবা পাকা তেঁতুল খেলে উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপ্রেসার তাৎক্ষণিকভাবে উপশম হয়। যারা উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ভুগছেন, তাদের জন্য তেঁতুল হতে পারে একটি প্রাকৃতিক সমাধান।

২. হজমশক্তি বৃদ্ধি ও পেটের সমস্যা নিরাময়: তেঁতুলে থাকা টারটারিক অ্যাসিড খাবার হজমে সহায়তা করে। পেটের বায়ু (গ্যাস) এবং হাত-পা জ্বালাপোড়ার ক্ষেত্রে তেঁতুলের শরবত অত্যন্ত উপকারী বলে প্রমাণিত। এটি হজম প্রক্রিয়াকে মসৃণ করে পেটের অস্বস্তি দূর করে।

৩. কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ ও জ্বর নিরাময়: আধুনিক কালে রক্তে ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমানোর কাজে তেঁতুল ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এছাড়াও, জ্বরে আক্রান্ত রোগীর জ্বর কমানোর জন্য এই ফলটি ঐতিহ্যগতভাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।

৪. ওজন কমাতে সহায়ক: স্থূলতা বা অতিরিক্ত ওজন হার্ট, লিভার, কিডনি এবং কিছু পেটের অসুখের সঙ্গে সম্পর্কিত। গবেষণায় দেখা গেছে, তেঁতুল ওজন কমাতে সহায়তা করে এবং স্থূলতা কমিয়ে শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।

৫. ক্ষতিকর কোলেস্টেরল দূরীকরণ: তেঁতুল খেলে শরীরের ক্ষতিকর কোলেস্টেরল (LDL) ধ্বংস হয় এবং উপকারী কোলেস্টেরলের (HDL) মাত্রা বাড়িয়ে দেয়, যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক।

৬. স্কেলিটাল ফ্লুরোসিস প্রতিরোধ: স্কেলিটাল ফ্লুরোসিস রোগের প্রকোপ হ্রাস করতেও তেঁতুল ব্যবহৃত হয়। পাকা তেঁতুল ভিজিয়ে রেখে সকালে শুধু সেই জল পান করলে হাত-পায়ের জ্বালাপোড়া কমে যায়।

৭. ত্বকের যত্নে তেঁতুল: বহু আগে থেকেই ত্বকের প্রাকৃতিক স্ক্রাবার হিসেবে তেঁতুল ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এতে থাকা আলফাহাইড্রোক্সেল অ্যাসিডের (AHA) কারণে এটি ত্বককে মসৃণ ও উজ্জ্বল করে তোলে। তেঁতুল ব্যবহারের মাধ্যমে ত্বকের মৃত কোষ দূর হয় এবং ত্বক সতেজ দেখায়।

তেঁতুল শুধু স্বাদের জন্যই নয়, এর বহুমুখী স্বাস্থ্য উপকারিতার জন্যও আমাদের খাদ্যতালিকায় একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে। তবে যেকোনো ভেষজ বা প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহারের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy