ডিম একটি অত্যন্ত পুষ্টিকর খাবার, যা প্রোটিনের অন্যতম সেরা উৎস হিসেবে বিবেচিত হয়। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় ডিম রাখেন না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া মুশকিল। এতদিন ডিমের কুসুম নিয়ে একটি প্রচলিত ধারণা ছিল যে এটি শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি করে। তবে আধুনিক গবেষণা সেই ধারণাকে ভুল প্রমাণ করেছে।
নতুন গবেষণা বলছে, ডিমের কুসুমে কোলেস্টেরল বাড়ে না, বরং এটি শরীরের অতিরিক্ত চর্বি কমাতে সহায়ক। শুধু তাই নয়, ডিমের কুসুম শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের (LDL) মাত্রা কমিয়ে ভালো কোলেস্টেরলের (HDL) পরিমাণ বৃদ্ধি করে।
বিশিষ্ট পুষ্টিবিদ সুমেধা সিংহের মতে, ডিম খেলে কখনই ওজন বাড়ে না। যারা ওজন বৃদ্ধির ভয়ে ডিম খাওয়া বাদ দিয়েছেন, তারা একটি ভুল করছেন।
তিনি আরও বলেন, তেল ও মসলাযুক্ত খাবার সাধারণত ওজন বাড়ানোর জন্য দায়ী। ডিম যদি খুব বেশি তেল দিয়ে কষিয়ে রান্না করা হয় বা ভেজে খাওয়া হয়, তবে তা ওজন বাড়াতে পারে মূলত তেল-মসলার কারণেই, ডিমের কারণে নয়।
সুতরাং, শরীরে চর্বি নিয়ে ভয় থাকলে ডিম বাদ দেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। বরং সঠিক উপায়ে ডিম খেয়ে আপনি শরীরের অতিরিক্ত চর্বি কমাতে পারেন এবং একই সাথে ডিমের সম্পূর্ণ পুষ্টিগুণও লাভ করতে পারেন। তবে তেল-ঝাল যুক্ত খাবার পরিহার করাই বুদ্ধিমানের কাজ। ঘন ঘন ভাজাভুজি বা অতিরিক্ত তেলে পোচ কিংবা অমলেট খাওয়াও এড়িয়ে যাওয়া উচিত।
জেনে নিন, যেভাবে ডিম খেলে শরীরের অতিরিক্ত চর্বি কমবে:
১. ডিম রান্নার সময় তেলের ব্যবহার পরিহার করুন। ডিম পোচ করার জন্য জল ও ভিনিগার ব্যবহার করতে পারেন। তবে সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর হলো সিদ্ধ ডিম খাওয়া।
২. সিদ্ধ ডিমের কুঁচোনো অংশের সাথে পালং শাক, শসা, ব্রকোলি, সিদ্ধ করা গাজর, কড়াইশুঁটি, টমেটো ও পেঁয়াজ মিশিয়ে খেতে পারেন। স্বাদ বৃদ্ধির জন্য সামান্য গোলমরিচ ও লেবুর রস যোগ করতে পারেন।
৩. ডিমের সাথে ওটমিল খাওয়া একটি স্বাস্থ্যকর বিকল্প। ওটমিল পাচনমূলক অ্যাসিডের ক্ষরণ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, ফলে দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা থাকে এবং সহজে ক্ষুধা লাগে না। এর মাধ্যমে ওজন নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য হয়।
সুতরাং, ডিমকে আপনার খাদ্যতালিকার অংশ করুন নির্ভয়ে এবং উপভোগ করুন এর স্বাস্থ্যকর উপকারিতা। কেবল রান্নার পদ্ধতির দিকে একটু নজর রাখলেই ডিম হতে পারে আপনার ওজন কমানোর সহায়ক বন্ধু।