ব্যাপারটা আর কিছুই নয় – আপনি কতটা ফিট সেটা জানাই উদ্দেশ্য! এ কথা তো মানবেন যে বয়স কম মানে আপনি ফিটনেস ধরে রাখতে পেরেছেন? শরীর-মন দু’য়ের বয়সই নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব এবং তা একে অপরকে প্রভাবিত করে। যাঁরা ফিট, তাঁরা রোগ-ভোগ থেকে দূরে থাকেন, মনের উপরেও বেশি চাপ পড়ে না, ফলে হাসি-খুশি থাকতেও অসুবিধে হয় না। উলটোদিকে, আপনি যদি আনফিট হন, তা হলে নানা লাইফস্টাইল ডিজ়িজ়ের খপ্পরে পড়বেন, বাড়বে স্ট্রেস, সময়ের আগেই গ্রাস করবে জরা। তাই প্রথমে জেনে নিন নিজের সঠিক অবস্থানটা ঠিক কী — ফিটনেসের বিচারে আপনি কোথায় দাঁড়িয়ে আছেন। তা থেকে বোঝা যাবে আপনার আসল বয়স আর শরীরের বয়সের মধ্যে আদৌ কোনও ফারাক আছে কিনা। যদি থাকে, তা হলে আজ থেকেই সচেতন হয়ে উঠুন এবং পরিবর্তন আনুন জীবনচর্যায়।
আপনার হার্টের অবস্থা কেমন?
10 সেকেন্ডের জন্য নিজের পালস মাপুন। তাকে ছয় দিয়ে গুণ করলে জেনে যাবেন এক মিনিটে আপনার হৃদস্পন্দনের হার কত। মনে রাখতে হবে, হার্ট দুর্বল হলে তার গতি দ্রুত হয়। বিশ্রামরত অবস্থায় মিনিটে 60-72 বার স্পন্দন হলে ধরে নিতে হবে যে আপনার আসল বয়স আর শরীরের বয়স মোটামুটি এক। যাঁদের হৃদগতি 55-59 বারের মধ্যে, তাঁরা আসল বয়স থেকে দুই বাদ দিন। যদি 100-র কাছাকাছি হয় হৃদগতির হার, তা হলে বুঝবেন সতর্ক হওয়ার সময় এসে গিয়েছে। অ্যাথলিটদের ক্ষেত্রে অবশ্য গতিটা 50-এর কমও হতে পারে।
মাটিতে পা ছড়িয়ে বসে হাত কতটা এগোতে পারছেন?
মাটিতে পা ছড়িয়ে সোজা হয়ে বসুন। পা দুটো জোড়া করে সামনে মেলে রাখতে হবে। হাত রাখুন পাশে। যেখানে হাতে পাতা রয়েছে সেখানে একটা দাগ দিন। তার পর হাতটা সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান। কতদূর যাচ্ছে দেখুন, সেখানে ফের একটা দাগ দিন। দুটো দাগের মধ্যেকার দূরত্ব 5 ইঞ্চির কম বা কাছাকাছি হলে বুঝতে হবে যে আপনার ফ্লেক্সিবিলিটি কমতে আরম্ভ করেছে এবং শরীরের বয়স আপনার আসল বয়সের চেয়ে অন্তত বছর দুয়েক তো বেশি হবেই। যাঁরা 10 ইঞ্চি পৌঁছতে পেরেছেন, তাঁদের চিন্তিত হওয়ার কারণ নেই। যাঁরা সেই মাত্রা পেরিয়েছেন, তাঁরা বয়স থেকে তিন বছর বাদ দিন।
কতগুলো পুশ আপ মারতে পারেন?
একটানা আপনি কতগুলো পুশ আপ করতে পারবেন? যাঁরা কুড়ির বেশি পারছেন, তাঁদের চিন্তা করার কিছু নেই। দশের কম হলে সাবধান। যাঁরা মেরে-কেটে পাঁচটি পুশআপ করতে পারেন, তাঁদের বুঝতে হবে যে পেশির শক্তি কমতে আরম্ভ করেছে। পেশির শক্তি কিন্তু বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই কমে। তাই পাঁচটি পুশআপে আটকে যাওয়ার অর্থ হচ্ছে আসল বয়সের চেয়ে আপনার শরীরের বয়স অন্তত পাঁচ বছর বেশি।
নিতম্ব ও কোমরের মাপের অনুপাত
নাভির দু’ ইঞ্চি উপর থেকে পেটের মাপ নিন। নিতম্বের সবচেয়ে প্রসারিত অংশটির মাপ করুন। দু’টির ভাগফল বের করতে হবে। মহিলাদের ক্ষেত্রে উত্তর .85 বা তার চেয়ে কম হওয়া উচিত। এর থেকে যত দূরে সরবেন তত বাড়বে শরীরের বয়স।
মনে রাখবেন, 40 এর পর থেকে এমনিতেই বিপাকক্রিয়ার হার শ্লথ হতে থাকে। তার মধ্যে আবার যাঁরা বেশি ভাজাভুজি খান, কোনও ব্যায়াম করেন না, দিনের বেশিরভাগ সময়টা বসে কাটান, রাতে সাত-আট ঘণ্টার কম ঘুমোন, তাঁদের ফিটনেস কমে। আর আনফিট হলেই খুব তাড়াতাড়ি বাড়ে শরীরের বয়স। এই পরিস্থিতি এড়াতে চাইলো গোড়া থেকেই নিয়ন্ত্রিত জীবন যাপন করা অভ্যেস করতে হবে।