ঝগড়াঝাঁটি আমাদের জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। কম-বেশি সবাইকেই কোনো না কোনো সময় ঝগড়ায় জড়াতে হয়। কিন্তু ঝগড়ার সময় আমরা কী বলছি, তা নিয়ে অনেকেই সচেতন থাকেন না। কিছু কথা এমন পরিস্থিতি তৈরি করে, যা ঝগড়াকে আরও দীর্ঘস্থায়ী এবং তিক্ত করে তোলে। তাই সম্পর্ক ভালো রাখতে এবং ঝগড়া দ্রুত মেটাতে এই ৫টি কথা বলা থেকে বিরত থাকা উচিত।
১. “এটা তোমার দোষ ছিল”:
ঝগড়ার মুহূর্তে কাউকে সরাসরি দোষারোপ করা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তোলে। এই ধরনের কথা প্রতিপক্ষের মনে আত্মরক্ষামূলক মনোভাব তৈরি করে এবং সেও পাল্টা দোষারোপ করতে শুরু করে। এর ফলে ঝগড়া কোনো সমাধান ছাড়াই চলতে থাকে। তাই এমন কথা না বলে, সমস্যাটির উপর মনোযোগ দেওয়া উচিত।
২. “তুমি আগেও এই একই ভুল করেছো”:
বর্তমান ঝগড়ার মধ্যে অতীতের ভুল টেনে আনলে তা শুধু পরিস্থিতিকেই খারাপ করে না, বরং প্রতিপক্ষকে আরও বেশি রাগান্বিত করে তোলে। এতে ঝগড়ার বিষয় থেকে সরে গিয়ে ব্যক্তিগত আক্রমণের পর্যায়ে চলে আসে। ঝগড়াটি দ্রুত মেটাতে হলে কেবল বর্তমান সমস্যা নিয়েই কথা বলা উচিত।
৩. “আমার আর ভালো লাগছে না, আমি তোমার কাছ থেকে দূরে যেতে চাই”:
ঝগড়ার সময় বিরক্তি প্রকাশ করে বা সম্পর্ক শেষ করার হুমকি দিয়ে কথা বললে তা প্রতিপক্ষকে আঘাত করে এবং ঝগড়ার তীব্রতা আরও বাড়িয়ে দেয়। এই ধরনের কথা সম্পর্কের প্রতি অবিশ্বাস তৈরি করে। এমন পরিস্থিতিতে বরং শান্ত থাকার চেষ্টা করা বা সাময়িকভাবে সেখান থেকে সরে যাওয়াই ভালো।
৪. “তুমি একটা ভীরু”:
ঝগড়ার সময় কাউকে ভীরু, কাপুরুষ বা অন্য কোনো অসম্মানজনক শব্দ ব্যবহার করলে তা ঝগড়াকে মারামারির পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারে। এই ধরনের ব্যক্তিগত আক্রমণ প্রতিপক্ষের আত্মসম্মানে আঘাত করে, যা পরিস্থিতিকে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণের বাইরে নিয়ে যেতে পারে।
৫. “ভালোভাবে কথা বলো”:
যখন একজন ব্যক্তি রাগে উত্তেজিত হয়ে কথা বলছেন, তখন তাকে “ভালোভাবে কথা বলো” বললে তা আরও বেশি বিরক্তির জন্ম দেয়। কারণ, ঝগড়ার মুহূর্তে ঠান্ডা মাথায় কথা বলা সবার পক্ষে সম্ভব হয় না। এমন পরিস্থিতিতে যদি আপনার সহ্য না হয়, তাহলে সেখান থেকে সরে যাওয়া বা ঠান্ডা মাথায় তাকে বোঝানোর চেষ্টা করাই বুদ্ধিমানের কাজ।
এই ৫টি কথা এড়িয়ে চলতে পারলে ঝগড়া অনেক দ্রুত এবং কম তিক্ততার সাথে মিটিয়ে ফেলা সম্ভব। এটি কেবল সাময়িক শান্তিই দেয় না, বরং দীর্ঘমেয়াদি সম্পর্কের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ।