যখন কোনো মা তার গর্ভস্থ শিশুর প্রথম লাথি অনুভব করেন, তখন তা মাতৃত্বের এক অসাধারণ অনুভূতি নিয়ে আসে। এই ৯ মাসের যাত্রায় শিশুর প্রতিটি নড়াচড়া মা’কে কৌতূহলী করে তোলে। শিশুর লাথি মারার ধরন, সংখ্যা এবং এর পেছনের কারণগুলো নিয়ে মায়েদের মনে অনেক প্রশ্ন আসে। আজ আমরা গর্ভাবস্থায় শিশুর লাথি মারার বিষয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জেনে নেব।
১. শিশুর সুস্বাস্থ্যের লক্ষণ:
মায়ের পেটে শিশুর লাথি মারার অর্থ হলো শিশু সুস্থ এবং তার বৃদ্ধি সঠিকভাবে হচ্ছে। লাথি মারা শিশুর ব্যস্ততা এবং তার শারীরিক সুস্থতার একটি লক্ষণ। এটি প্রমাণ করে যে শিশুর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ঠিকঠাক কাজ করছে।
২. বাইরের শব্দের প্রতি প্রতিক্রিয়া:
গর্ভস্থ শিশুরা বাইরের শব্দ বা আওয়াজের প্রতি দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানায়। যখন কোনো জোরে শব্দ হয়, তখন শিশু তার নড়াচড়ার মাধ্যমে সেই প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করে। তাই বাইরের পরিবেশের সাথেও শিশুটি তার নিজস্ব উপায়ে যোগাযোগ স্থাপন করে।
৩. বাম পাশে শুলে বেশি নড়াচড়া:
গর্ভবতী মায়েরা যখন বাম পাশে কাত হয়ে শোন, তখন শিশুরা বেশি পরিমাণে লাথি মারে। এর কারণ হলো, এই অবস্থায় মায়ের শরীরে রক্তসঞ্চালন বৃদ্ধি পায়, যা শিশুর শরীরেও রক্ত ও অক্সিজেনের সরবরাহ বাড়ায়। ফলে শিশু আরও বেশি সক্রিয় হয়ে ওঠে।
৪. খাবারের পর সক্রিয়তা বৃদ্ধি:
গর্ভাবস্থায় মায়েরা ভারী খাবার, যেমন দুপুরের বা রাতের খাবারের পর শিশুর নড়াচড়া বেশি অনুভব করেন। এর কারণ হলো, খাবার থেকে প্রাপ্ত শক্তি শিশুর মধ্যে আরও বেশি সক্রিয়তা নিয়ে আসে।
৫. কখন শুরু হয় লাথি মারা?
সাধারণত, প্রথমবার মা হচ্ছেন এমন নারীরা গর্ভাবস্থার ৯ সপ্তাহের পর থেকে শিশুর লাথি অনুভব করতে শুরু করেন। তবে যারা দ্বিতীয় বা তার পরের সন্তানের জন্ম দিতে চলেছেন, তাদের ক্ষেত্রে এটি ১৩ সপ্তাহের পর থেকে শুরু হতে পারে।
৬. কম লাথি চিন্তার কারণ:
শিশুর কম নড়াচড়া তার স্বাস্থ্য সম্পর্কে চিন্তার কারণ হতে পারে। যদি শিশু স্বাভাবিকের চেয়ে কম নড়াচড়া করে, তবে এটি অক্সিজেনের অভাবের ইঙ্গিত হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
শিশুর প্রতিটি লাথি কেবল একটি অনুভূতি নয়, বরং এটি তার সুস্থ থাকা এবং বিকাশের গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করে।