রাতে ভালো ঘুম না হওয়া आजकल একটি সাধারণ সমস্যা। অনিদ্রা বা নিদ্রাহীনতায় ভোগা মানুষের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। আমেরিকার টাফটস ইউনিভার্সিটির গবেষকদলের সাম্প্রতিক সমীক্ষা অনুযায়ী, পৃথিবীতে প্রতি তিনজনে একজন এই সমস্যায় ভুগছেন। আধুনিক জীবনের নানা দিক, যেমন – উদ্বেগ, দুশ্চিন্তা, শারীরিক ব্যথা এবং অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস রাতের ঘুম কেড়ে নেয়।
এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে অনেকেই ঘুমের ওষুধ খান, আবার কেউ কেউ ধ্যান বা প্রাণায়ামের সাহায্য নেন। তবে সবসময় এর সুফল পাওয়া যায় না। তাছাড়া, নিয়মিত ঘুমের ওষুধ খাওয়ার কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে, প্রাকৃতিকভাবে গভীর ঘুম আনার উপায় খুঁজে বের করা জরুরি। অ্যাকুপ্রেসার তেমনই একটি প্রাকৃতিক পন্থা বাতলে দিচ্ছে।
অ্যাকুপ্রেশার হলো এক ধরনের বিকল্প চিকিৎসা পদ্ধতি, যেখানে শরীরের কিছু নির্দিষ্ট ‘প্রেশার পয়েন্ট’ চিহ্নিত করে সেখানে পরিমিত চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে বিভিন্ন রোগ নিরাময়ের চেষ্টা করা হয়। ‘জার্নাল অফ পেইন এ্যান্ড সিম্পটম ম্যানেজমেন্ট’-এ প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে অ্যাকুপ্রেশার বিশেষজ্ঞ এডজার্ট আর্নস্ট ও ডাক্তার মেয়ং সু লি জানিয়েছেন, শরীরের বিশেষ চারটি জায়গায় দিনে মাত্র এক মিনিট করে আঙুলের সাহায্যে মৃদু চাপ সৃষ্টি করলে রাতের গভীর ঘুম নিশ্চিত করা যেতে পারে। আসুন, জেনে নেওয়া যাক সেই চারটি জায়গা:
১. কবজির হাড়ের ঠিক পাশে: ছবিতে চিহ্নিত অংশে অন্য হাতের বুড়ো আঙুল দিয়ে এক মিনিটের জন্য মৃদুভাবে চেপে ধরুন। দুই হাতের কবজিতেই একইভাবে চাপ দিন।
২. হাতের তালুর ঠিক তিন আঙুল নীচে কবজির মাঝামাঝি: ছবি দেখে হাতের তালুর তিন আঙুল নীচের অংশটি চিহ্নিত করুন। তারপর দু’ হাতেরই এই অংশে এক মিনিটের জন্য মৃদু চাপ রাখুন।
৩. দুই ভুরুর ঠিক মাঝে: এই অংশেও এক মিনিট আঙুল দিয়ে মৃদু চাপ রাখুন।
৪. বুকের ঠিক মাঝখানে: পাঁজরের একেবারে নীচের হাড় থেকে চার আঙুল উপরে বুকের ঠিক মাঝামাঝি অংশে এক মিনিটের জন্য চেপে রাখুন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ৩ নম্বর ও ৪ নম্বর অংশ দুটি একসঙ্গে চেপে ধরতে পারলে আরও ভালো ফল পাওয়া যায়।
বলা হচ্ছে, এই চারটি জায়গায় প্রতিদিন একবার করে মাত্র এক মিনিট ব্যয় করলেই রাতের গভীর ঘুম নিশ্চিত করা সম্ভব। অর্থাৎ, মোট সময় লাগবে মাত্র চার মিনিট। ডাক্তার আর্নস্ট ও ডাক্তার লি-র দাবি, এই প্রক্রিয়াটি অত্যন্ত কার্যকর। বিশ্বাস না হলে, নিজেরাই যাচাই করে দেখতে পারেন এর কার্যকারিতা। ঘুমের ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এড়াতে এটি একটি সহজ ও প্রাকৃতিক উপায় হতে পারে।