কর্মব্যস্ততার ফাঁকে ‘পাওয়ার ন্যাপ’, মাত্র ৫ মিনিটের ঘুমেই বাড়বে মস্তিষ্কের ক্ষমতা, দূরে থাকবে বার্ধক্যের ছাপ! চাঞ্চল্যকর গবেষণায় নতুন দিশা

দৈনন্দিন জীবনের একঘেয়ে রুটিন মেনে একটানা কাজ করাটা প্রায় সবার জন্যই কঠিন। কর্মব্যস্ততার এই জীবনে ক্লান্তি এবং মনোযোগের অভাব খুবই সাধারণ সমস্যা। তবে নতুন একটি গবেষণা বলছে, একটানা কাজ না করে কাজের ফাঁকে সামান্য বিশ্রাম, বিশেষ করে মাত্র ৫ মিনিটের ঘুমও আপনার স্বাস্থ্যের জন্য অসাধারণ সুফল বয়ে আনতে পারে। এটি শুধু ক্লান্তিই দূর করবে না, মস্তিষ্কের ক্ষমতাও উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়ে দেবে।

‘জেনারেল সাইকিয়াট্রি’ জার্নালে প্রকাশিত গবেষণা:

সম্প্রতি ‘জেনারেল সাইকিয়াট্রি’ নামক মনোবিজ্ঞানের এক স্বনামধন্য পত্রিকায় প্রকাশিত এক গবেষণাপত্র এই চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এনেছে। বিজ্ঞানীরা দীর্ঘ সমীক্ষার মাধ্যমে দেখিয়েছেন, যারা দুপুরে অল্প হলেও ঘুমান, অন্যদের তুলনায় তাদের মস্তিষ্ক অনেক বেশি সক্রিয় ও কার্যকরী থাকে। গবেষণায় আরও দেখা গেছে, এই ‘পাওয়ার ন্যাপ’ স্মৃতিশক্তিকে প্রখর করে তোলে এবং মস্তিষ্কের বার্ধক্যজনিত সমস্যাগুলোকেও দেরিতে দেখা দেয়।

সমীক্ষার পদ্ধতি ও ফলাফল:

এই গবেষণার জন্য বিভিন্ন বয়সের মোট ২২১৪ জন মানুষকে বেছে নেওয়া হয়েছিল। এদের মধ্যে ১৫৩৪ জনকে দুপুরে ইচ্ছামতো ঘুমানোর সুযোগ দেওয়া হয়। বাকি ৬৮০ জনকে দুপুরে না ঘুমিয়ে টানা কাজ করে যেতে বলা হয়। উভয় দলকেই রাতে সাড়ে ৬ ঘণ্টা করে ঘুমাতে দেওয়া হয়। যাদের দুপুরে ঘুমাতে দেওয়া হয়েছে, তাদের ঘুমানোর জন্য কোনো নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেওয়া হয়নি – কেউ মাত্র ৫ মিনিট ঘুমিয়েছেন, আবার কেউ বা দেড় ঘণ্টা।

মাসখানেক পর এই ২২১৪ জনের ‘মিনি মেন্টাল স্টেট এগজাম’ (Mini Mental State Exam) বা মানসিক অবস্থার পরীক্ষা নেওয়া হয়। এই পরীক্ষায় দেখা যায়, যারা দুপুরে ঘুমিয়েছেন, তাদের স্মৃতিশক্তি, সমস্যা সমাধান করার ক্ষমতা, সচেতনতা এবং সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা অন্যদের থেকে উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি।

বিশেষজ্ঞদের দাবি: সুস্বাস্থ্যের জন্য দুপুরে ঘুম অপরিহার্য

এই ফলাফলের ভিত্তিতে বিজ্ঞানীরা জোর দিয়ে দাবি করছেন যে, নিজেকে সমৃদ্ধ করতে এবং কাজের ক্ষমতা বাড়াতে চাইলে দুপুরে ঘুমানো অত্যন্ত জরুরি। কর্মব্যস্ত জীবনে প্রতিদিনের রুটিনে অল্প সময়ের জন্য হলেও এই ‘পাওয়ার ন্যাপ’ মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়াতে, স্মৃতিশক্তি উন্নত করতে এবং দীর্ঘমেয়াদী মানসিক স্বাস্থ্য বজায় রাখতে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। তাই, কর্মক্ষেত্রের মাঝে সামান্য বিরতি নিয়ে আপনার মস্তিষ্ককে সতেজ করার সুযোগ দিন। এটি আপনার উৎপাদনশীলতা এবং সামগ্রিক সুস্থতা উভয়কেই উন্নত করবে।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy