ওজন কমিয়েও বাড়ছে না বন্ধ্যাত্ব মুক্তির সম্ভাবনা? নতুন গবেষণায় চাঞ্চল্যকর তথ্য!

অতিরিক্ত ওজন শুধু শরীরের পক্ষেই ক্ষতিকর নয়, অনেক সময় এটি সন্তান ধারণের পথেও বাধা হয়ে দাঁড়ায় বলে প্রচলিত ধারণা। এই কারণেই স্থূলতা ও বন্ধ্যাত্বের সমস্যায় ভোগা অনেক নারী সন্তান ধারণের আশায় ওজন কমানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু ওজন কমানো কি সত্যিই সন্তান ধারণের সম্ভাবনা বাড়ায়? সাম্প্রতিক এক মার্কিন গবেষণা এই প্রচলিত ধারণায় বড়সড় প্রশ্নচিহ্ন এঁকে দিয়েছে, যা বিজ্ঞানমহলে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।

গবেষণার ফলাফল: প্রত্যাশার বিপরীত চিত্র
আমেরিকার মোট নয়টি হাসপাতালের ৩৭৯ জন স্থূলতা ও বন্ধ্যাত্বের সমস্যায় ভোগা নারীকে নিয়ে এই গবেষণা চালানো হয়। একটি প্রখ্যাত বিজ্ঞান বিষয়ক পত্রিকায় প্রকাশিত এই গবেষণাপত্রে দেখা গেছে, কঠোরভাবে ওজন কমানোর পরেও তাদের সন্তান ধারণের সম্ভাবনায় উল্লেখযোগ্য কোনো বৃদ্ধি ঘটেনি।

গবেষকদের দল অংশগ্রহণকারী নারীদের দুটি ভাগে ভাগ করে: ১৮৮ জনের একটি দলকে খাদ্যাভ্যাস ও নিয়মিত শরীরচর্চার মাধ্যমে ওজন কমাতে বলা হয়। অন্যদিকে, ১৯১ জনের দ্বিতীয় দল স্বাভাবিক জীবনযাপন ও প্রচলিত ওষুধপত্র ব্যবহার করে। ১৬ সপ্তাহ পর দেখা যায়, প্রথম দলের নারীরা গড়ে প্রায় সাত শতাংশ ওজন কমিয়েছেন। এরপর উভয় দলের নারীদেরই সন্তান ধারণের জন্য ত্রিস্তরীয় চিকিৎসা দেওয়া হয়। আশ্চর্যজনকভাবে, চিকিৎসার পর সন্তান ধারণে সক্ষমতার হার দুই দলের মধ্যেই প্রায় সমান ছিল। ওজন কমানো ১৮৮ জনের মধ্যে ২৩ জন সন্তান ধারণে সক্ষম হন, যেখানে ওজন না কমানো ১৯১ জনের মধ্যে ২৯ জন সফল হন। এই পরিসংখ্যান প্রচলিত ধারণার অনেকটাই বিপরীত চিত্র তুলে ধরে।

অন্যান্য শারীরিক সুবিধা, কিন্তু সরাসরি বন্ধ্যাত্বে প্রভাব নেই?
যদিও এই গবেষণা সরাসরি সন্তান ধারণের সম্ভাবনা বাড়ানোর ক্ষেত্রে ওজন কমানোর কোনো অতিরিক্ত উপযোগিতা খুঁজে পায়নি, তবে গবেষকরা উল্লেখ করেছেন যে, ওজন কমানোর ফলে কিডনি, হার্ট বা ডায়াবেটিসের মতো অন্যান্য শারীরিক সমস্যা থেকে অনেক নারী রেহাই পেয়েছেন। সাধারণত এই ধরনের সমস্যাগুলো সন্তান ধারণের সময় বিভিন্ন রকমের জটিলতা ডেকে আনতে পারে। অর্থাৎ, ওজন কমানোর স্বাস্থ্যগত সুবিধাগুলি অনস্বীকার্য, কিন্তু বন্ধ্যাত্ব দূরীকরণে এর সরাসরি কার্যকারিতা এই গবেষণায় প্রমাণিত হয়নি।

গবেষকরা মনে করছেন, এই সম্পূর্ণ বিষয়টি নিয়ে আরও বিস্তারিত গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে। তবে, সন্তান ধারণের সময় একটি স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা সার্বিক সুস্থতার জন্য অত্যন্ত জরুরি বলেই তারা মত দিয়েছেন, যদিও এর সাথে সরাসরি উর্বরতার সম্পর্ক নিয়ে আরও গভীর অনুসন্ধান প্রয়োজন।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy