সুস্বাস্থ্যের জন্য পর্যাপ্ত ঘুম অপরিহার্য। কিন্তু ঘুমের ধরনের ওপরও আমাদের স্বাস্থ্যের ভালো-মন্দ অনেকটাই নির্ভর করে। অনেকেই উপুড় হয়ে ঘুমানো বা বই পড়া পছন্দ করেন, কারণ এটি তাদের কাছে আরামদায়ক মনে হয়। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই অভ্যাসটি দীর্ঘমেয়াদে শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। উপুড় হয়ে শোয়া মেরুদণ্ড, শ্বাস-প্রশ্বাস এবং সামগ্রিক ঘুমের গুণগত মানের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
চিকিৎসকরা সাধারণত উপুড় হয়ে শোয়ার বদলে চিত হয়ে ঘুমানোর পরামর্শ দেন। চিত হয়ে ঘুমালে শ্বাসকষ্টের সমস্যা কমে, পিঠ ও কোমরের ব্যথা থেকে মুক্তি মেলে এবং ত্বকের জন্যও এটি ভালো।
উপুড় হয়ে শোয়ার ক্ষতিকর দিক:
মেরুদণ্ডে চাপ: উপুড় হয়ে ঘুমালে মেরুদণ্ড এবং পেটের ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে। দীর্ঘদিন এই অভ্যাস বজায় রাখলে ঘাড় ও পিঠে দীর্ঘস্থায়ী ব্যথার কারণ হতে পারে। মেরুদণ্ডের স্বাভাবিক অবস্থান ব্যাহত হওয়ায় এটি শরীরের ভারসাম্য নষ্ট করে।
শ্বাস-প্রশ্বাসে ব্যাঘাত: উপুড় হয়ে শোয়া অবস্থায় বুক এবং পেটের ওপর চাপ পড়ায় শ্বাস-প্রশ্বাসের স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি হয়। এর ফলে ঘুমের মধ্যে শ্বাসকষ্ট হতে পারে এবং ঘুমের গুণগত মান হ্রাস পায়। পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবে দিনের বেলায় ক্লান্তি, মনোযোগের অভাব এবং অন্যান্য শারীরিক জটিলতা দেখা দিতে পারে।
শারীরিক জটিলতা: পর্যাপ্ত ঘুম না হলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়ে। উপুড় হয়ে শোয়ার কারণে দেহের সঠিক বিশ্রাম না হওয়ায় হজমের সমস্যাসহ আরও অনেক স্বাস্থ্যগত জটিলতা তৈরি হতে পারে।
অভ্যাস পরিবর্তনের উপায়:
উপুড় হয়ে ঘুমানো বা অন্য কোনো কাজ করার অভ্যাস ত্যাগ করা কিছুটা কঠিন হতে পারে, কিন্তু সুস্থ থাকার জন্য এটি জরুরি।
বসে কাজ করা: বিছানায় উপুড় হয়ে বই পড়া বা লেখার পরিবর্তে চেয়ারে সোজা হয়ে বসে কাজ করার অভ্যাস করুন। এতে মেরুদণ্ড সোজা থাকবে এবং ঘাড়ের ওপর চাপ কম পড়বে।
ঘুমের ভঙ্গি পরিবর্তন: উপুড় হয়ে ঘুমানোর পরিবর্তে চিত হয়ে বা একপাশে কাত হয়ে ঘুমানোর চেষ্টা করুন। এটি মেরুদণ্ডকে তার স্বাভাবিক অবস্থানে থাকতে সাহায্য করে।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী, সুস্থ ও নিরোগ থাকতে হলে ঘুমের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত। সঠিক ঘুমের অভ্যাস আমাদের দৈনন্দিন জীবনকে আরও সতেজ ও কর্মঠ করে তোলে।