বাঙালির দৈনন্দিন পাতে কাঁচা মরিচ একটি অপরিহার্য উপাদান। কেবল রান্নার স্বাদ ও ঝাল বাড়ানোই নয়, কাঁচা মরিচ ভিটামিন ও পুষ্টিগুণের এক চমৎকার উৎস। গবেষকদের মতে, নিয়মিত কাঁচা মরিচ খেলে শরীর ঠান্ডা থাকে এবং নানা রোগ থেকে সুরক্ষা পাওয়া যায়।
কাঁচা মরিচের ১০টি স্বাস্থ্য উপকারিতা:
১. দেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ: গ্রীষ্মকালে মসলাযুক্ত খাবারের সঙ্গে কাঁচা মরিচ খেলে তা ঘামের মাধ্যমে শরীরের অতিরিক্ত তাপ বের করে দেয়, ফলে শরীর ঠান্ডা থাকে।
২. ওজন নিয়ন্ত্রণ: কাঁচা মরিচে থাকা ক্যাপসাইকিন উপাদানটি মেটাবলিজম বাড়িয়ে ক্যালোরি পোড়াতে সাহায্য করে। এটি খাদ্যের চর্বি ধ্বংস করে, ফলে মোটা হওয়ার ভয় থাকে না।
৩. হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য: প্রতিদিন একটি করে কাঁচা মরিচ খেলে রক্ত জমাট বাঁধার ঝুঁকি কমে এবং হৃদপিণ্ডের বিভিন্ন সমস্যা প্রতিরোধ হয়।
৪. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: কাঁচা মরিচে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এটি সর্দি, কাশি এবং জ্বর প্রতিরোধে কার্যকর।
৫. দৃষ্টিশক্তি ও ত্বকের সুরক্ষা: এতে থাকা ভিটামিন এ চোখের দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে, আর ভিটামিন সি ত্বক ও চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে।
৬. হজমে সহায়তা: কাঁচা মরিচ খেলে লালা নিঃসরণ বৃদ্ধি পায়, যা হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে। এটি গ্যাস, অম্বল এবং বদহজমের সমস্যা দূর করতেও সহায়ক।
৭. ব্যথা উপশম: কাঁচা মরিচের ক্যাপসাইসিন প্রদাহ কমাতে এবং বাতব্যথার মতো যন্ত্রণা উপশমে ভূমিকা রাখে।
৮. ক্যান্সার প্রতিরোধ: গবেষণায় দেখা গেছে, তাজা কাঁচা মরিচে থাকা ক্যাপসাইসিন ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি রোধ করতে পারে।
৯. মানসিক চাপ হ্রাস: কাঁচা মরিচ খেলে শরীরে এন্ডোরফিন হরমোনের ক্ষরণ বাড়ে, যা মানসিক চাপ কমাতে এবং মন-মেজাজ চাঙ্গা রাখতে সাহায্য করে।
১০. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ: নিয়মিত কাঁচা মরিচ খেলে ইনসুলিনের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায়, ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে।
তবে মনে রাখা জরুরি, কাঁচা মরিচ কাঁচাই খাওয়া উচিত। কারণ ৩৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রায় রান্না করলে এর ভিটামিন সি নষ্ট হয়ে যায়। তাই এর পূর্ণাঙ্গ উপকারিতা পেতে প্রতিদিন খাবারের সঙ্গে একটি করে কাঁচা মরিচ খাওয়ার অভ্যাস করা যেতে পারে।