অনেকেই মনে করেন, মাছের তেল স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। বরং মাছের সাদা অংশ বেশি পুষ্টি জোগায়। তাই তেল বা চর্বি খাওয়া উচিত নয়। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে, মাছের মতোই তার তেল সমান পুষ্টিকর। এতে প্রোটিন, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, প্রচুর ভিটামিন এ, ডি, আয়োডিন ছাড়াও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পাওয়া যায়। এসব উপাদান শরীরের জন্য অতি প্রয়োজনীয়। এসব ছাড়াও মাছের ৭০ শতাংশ জুড়ে রয়েছে অন্যান্য ফ্যাট।
পুষ্টিবিদদের মতে, মাছের তেল হৃৎপিণ্ডের জন্য যথার্থ পুষ্টি জোগায়। যারা নিয়মিত মাছ খান তাদের মধ্যে হৃদরোগের সমস্যা খুবই কম। বিশেষজ্ঞদের মতে, মাছ খেলে হৃদরোগজনিত অনেক জটিলতা কমে। মাছের তেলে থাকা ভালো কোলেস্টেরল শরীর এবং হৃৎপিণ্ডের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
নিয়মিত মাছের তেল খেলে ধমনিতে জমতে থাকা চর্বির সমস্যা কমতে থাকে। এটি রক্তকে জমাট বাঁধতেও বাধা দেয়। মাছের তেলে থাকা ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড মস্তিষ্কের কাজকর্ম সঠিকভাবে চালাতে সাহায্য করে। মাছের তেল খেলে চোখের স্বাস্থ্যও ভালো হবে। সেই সঙ্গে দৃষ্টিশক্তিও উন্নত হবে।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, শিশুদের বুদ্ধির বিকাশ, স্মৃতিশক্তি ও দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে ডিএইচএ চমৎকার ভূমিকা রাখতে পারে। ছয় থেকে দশ বছর বয়সী শিশুরা পর্যাপ্ত ওমেগা-থ্রি এবং ডিএইচএ গ্রহণ করলে পরবর্তী জীবনে শিশুদের বুদ্ধির বিকাশ, স্মৃতিশক্তি, দৃষ্টিশক্তি বাড়ে ও মেধার পরিচয় দেয়। ছোট-বড় উভয় মাছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান থাকায় এগুলি ক্যান্সার, দীর্ঘমেয়াদি প্রদাহজনিত রোগ, আর্থ্রাইটিস রোধে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে ত্বক ভালো রাখে।
মাছের তেলে থাকা এক ধরনের রাসায়নিক উপাদান ক্যান্সারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে সাহায্য করে। ছোট কাঁটাযুক্ত মাছকে ক্যালসিয়ামের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস বলা হয়ে থাকে। এ ছাড়া মাছে আমিষ ও ওমেগা থ্রি চর্বির পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ খনিজ উপাদান, সেলেনিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ ও ফসফরাস থাকে যা দাঁত, পেশি ও হাড়ের গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।