স্বামীর বেহিসেবি খরচ? সংসারে অমঙ্গল রুখতে জানুন কিছু জরুরি পদক্ষেপ
কলকাতা: প্রতিটি মানুষের জীবনেই অর্থের প্রয়োজন অনস্বীকার্য। তবে, অনেকেই আছেন যারা হিসেব-নিকেশ ছাড়াই অকারণে অর্থ ব্যয় করে ফেলেন। আপনার স্বামীও কি সেই তালিকায়? যদি উত্তর হ্যাঁ হয়, তবে এখনই সতর্ক হোন। কারণ এই অভ্যাস আপনার সংসারের জন্য বড় ধরনের আর্থিক সংকট ডেকে আনতে পারে। তবে ভেঙে পড়লে চলবে না, বরং বুদ্ধিমত্তার সাথে পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হবে। কিছু সহজ কৌশল অবলম্বন করলেই আপনি এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।
প্রথমেই খুঁজুন আসল কারণ:
সমস্যার গভীরে না গেলে সমাধান করা কঠিন। তাই আপনার স্বামীর এই অতিরিক্ত খরচের নেপথ্যের কারণ খুঁজে বের করার চেষ্টা করুন। তিনি কোথায় যাচ্ছেন, কাদের সাথে মেলামেশা করছেন, এই সমস্ত বিষয়ে একটু নজর রাখুন। হতে পারে তিনি কোনো ধরনের নেশায় আসক্ত হয়ে পড়েছেন অথবা বন্ধুদের পাল্লায় পড়ে অযথা অর্থ খরচ করছেন। পুরো বিষয়টি ভালোভাবে জানার পরই আপনি কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারবেন। রোগ নির্ণয় না করে যেমন ওষুধ দেওয়া যায় না, তেমনি কারণ না জেনে সমস্যার সমাধান করাও সম্ভব নয়।
সরাসরি কথা বলুন, তবে শান্তভাবে:
আপনার স্বামীকে সরাসরি এই বিষয়ে কথা বলুন। তাকে বোঝান যে এভাবে টাকা ওড়ানো ঠিক নয় এবং এর ফলে সংসারে আর্থিক টানাপোড়েন সৃষ্টি হচ্ছে। তবে মনে রাখবেন, ঝগড়ার মেজাজে কথা বললে কোনো ফল হবে না। বরং একটি শান্ত ও নিরিবিলি পরিবেশে তাকে নিয়ে বসুন এবং আপনার উদ্বেগের কথা খুলে বলুন। মুখ বুঁজে সবকিছু সহ্য করে গেলে এই সমস্যার কোনো সমাধান হবে না। তাই দ্বিধা ঝেড়ে ফেলে প্রথম কাজটি করুন – তার সাথে কথা বলুন। যদি তিনি আপনার কথা শোনেন, তবে দেখবেন অনেক জটিলতা সহজেই মিটে গেছে।
বাড়িতে সময় কাটানোর উপর জোর দিন:
এই কাজটি করা কঠিন হতে পারে, তবে সংসারের মঙ্গলের জন্য মনের উপর পাথর রেখে হলেও এটি করে দেখতে পারেন। আপনার স্বামীকে বাড়িতে থাকার জন্য উৎসাহিত করুন। অফিসের পর বা কাজের শেষে তাকে আপনার সাথে সময় কাটাতে বলুন। একসাথে সিনেমা দেখা, গল্প করা বা সাধারণ ঘরোয়া কাজকর্মে অংশ নিলে দেখবেন তার বাইরে যাওয়ার এবং অর্থ খরচের প্রবণতা অনেকটাই কমে যাবে। যখন তিনি বাড়িতে থাকবেন, তখন অহেতুক খরচের সুযোগও কম পাবেন। তাই তাকে বাড়িতে বেশি সময় দিতে উৎসাহিত করুন।
শুভাকাঙ্ক্ষীদের সাহায্য নিন:
আপনি যেমন আপনার স্বামীর ভালো চান, তেমনই নিশ্চয়ই এমন কিছু মানুষ আছেন যারা তার মঙ্গল কামনা করেন। এবার তাদের কাছে এই সমস্যার কথা খুলে বলুন। আমরা বুঝতে পারছি, ব্যক্তিগত বিষয় অন্যের কাছে বলতে আপনার অস্বস্তি হতে পারে। তবুও, প্রয়োজনে মুখ খুলতে হবে। এই শুভাকাঙ্ক্ষীরা হয়তো এমন কিছু মূল্যবান পরামর্শ দিতে পারবেন যা সমস্যার সমাধানে সহায়ক হবে। তাই নিজের ভেতরের কষ্ট চেপে না রেখে অন্যদের সাথে শেয়ার করুন।
প্রয়োজনে কঠোর হন:
যদি এত কিছুর পরেও আপনার স্বামী তার বেহিসেবি খরচের অভ্যাস না বদলান, সেক্ষেত্রে আপনাকে কঠোর হতে হতে পারে। তাকে ছেড়ে যাওয়ার মতো কঠিন হুঁশিয়ারি দিতে দ্বিধা করবেন না। তাকে বোঝান যে সংসারের এই আর্থিক দৈন্যদশা আপনি আর সহ্য করবেন না। তবে এই পদক্ষেপ নেওয়ার আগে ভালোভাবে চিন্তা করুন। যদি হুঁশিয়ারি দেওয়ার পরেও পরিস্থিতির কোনো উন্নতি না হয়, তবে কোনো অভিজ্ঞ মনোবিজ্ঞানী বা আর্থিক উপদেষ্টার পরামর্শ নিতে পারেন। তারা হয়তো এই সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসার সঠিক পথ দেখাতে পারবেন। তাই হতাশ না হয়ে সমাধানের চেষ্টা চালিয়ে যান।