স্বর্ণালংকার কেবল সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে না, এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে স্বাস্থ্যের ঝুঁকিও। অনেক সময় না জেনে ভুল মানের সোনা ব্যবহার করলে তা শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর হতে পারে, এমনকি তা মৃত্যুর কারণও হতে পারে। তাই সোনা কেনার আগে এর গুণগত মান সম্পর্কে সচেতন থাকা অত্যন্ত জরুরি।
বাজারে ‘কেডিএম’ (KDM) নামে যে সোনা বিক্রি হয়, তা খাঁটি সোনার সঙ্গে ক্যাডমিয়াম নামে একটি ক্ষতিকর ধাতু মিশিয়ে তৈরি করা হয়। খাঁটি সোনা নরম হওয়ায় অলংকার তৈরির উপযোগী করতে এতে খাদ মেশানো হয়। কেডিএম সোনায় সোনা এবং ক্যাডমিয়ামের অনুপাত থাকে ৯২:৮। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ক্যাডমিয়াম একটি বিষাক্ত ধাতু, যা দীর্ঘমেয়াদী ব্যবহারের ফলে শরীরের মধ্যে বিষক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে।
ক্যাডমিয়ামের ক্ষতিকর প্রভাব:
ক্যান্সার এবং কিডনির সমস্যা: দীর্ঘ সময় ধরে শরীরে ক্যাডমিয়ামের উপস্থিতি ক্যান্সার এবং কিডনি সংক্রান্ত রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
হাড় ও ফুসফুসের ক্ষতি: এটি হাড় এবং ফুসফুসের মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে।
অন্যান্য সমস্যা: শ্বাসকষ্ট, কিডনি অকার্যকর হওয়া এবং পুরুষত্বহীনতার মতো গুরুতর সমস্যাও সৃষ্টি করতে পারে।
বিশ্বের অনেক দেশেই স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণে অলংকারে ক্যাডমিয়ামের ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তাই অলংকার কেনার সময় হলমার্কযুক্ত সোনা কেনা সবচেয়ে নিরাপদ। হলমার্ক সোনা গুণগত মানের নিশ্চিত প্রমাণ দেয় এবং এতে স্বাস্থ্যের কোনো ঝুঁকি থাকে না।
সোনার মান বিভিন্ন ক্যারেটে বিভক্ত করা হয়—২৪ ক্যারেট, ২৩ ক্যারেট, ২২ ক্যারেট, ১৮ ক্যারেট, ১৪ ক্যারেট এবং ১০ ক্যারেট। সাধারণত ২২ ক্যারেট সোনা অলংকার তৈরির জন্য সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়, যেখানে ৯১.৬৭% খাঁটি সোনা থাকে।
তাই সোনা কেনার সময় কেবল দাম বা ডিজাইন নয়, বরং তার গুণগত মান এবং হলমার্ক চিহ্ন দেখে কেনা উচিত। এটি শুধু আপনার বিনিয়োগকেই সুরক্ষিত করবে না, বরং আপনার স্বাস্থ্যকেও সুরক্ষিত রাখবে।