‘সুপারফুড’ ডিম, প্রতিদিন সেদ্ধ ডিম খাওয়ার ৭ অবিশ্বাস্য উপকারিতা

ডিমকে যথার্থই ‘সুপারফুড’ বলা হয়, কারণ এটি পুষ্টিগুণে ভরপুর। ভিটামিন, মিনারেলস এবং প্রোটিনের সবচেয়ে ভালো উৎস হলো ডিম, আর এতে ক্যালোরিও থাকে বেশ কম। গবেষণায় দেখা গেছে, একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের প্রতিদিন দুটি করে ডিম খাওয়া উচিত। বিশেষ করে, সকালের নাস্তায় একটি সেদ্ধ ডিম আপনার সারাদিনের কর্মক্ষমতা বাড়িয়ে শরীরকে রাখে চাঙ্গা।

চলুন জেনে নেওয়া যাক, প্রতিদিন সকালে একটি সেদ্ধ ডিম খাওয়ার ৭টি অসাধারণ উপকারিতা:

১. শক্তি যোগায়
একটি বড় সেদ্ধ ডিমে প্রায় ৮০ ক্যালোরী থাকে, যার ৬০% ক্যালোরী আসে চর্বি থেকে। ফলে সকালের খাবারে একটি মাত্র সেদ্ধ ডিম খেলে সারাদিন ধরে শক্তি পাওয়া যায় এবং শারীরিক দুর্বলতা কমে আসে। এটি আপনাকে সারাদিনের কাজের জন্য প্রয়োজনীয় এনার্জি সরবরাহ করে।

২. হাড় গঠন ও মজবুত রাখে
সেদ্ধ ডিম ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ, যা হাড় ও দাঁতকে শক্তিশালী করতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভিটামিন ডি খাবার থেকে ক্যালসিয়াম গ্রহণ করতে সহায়তা করে এবং রক্তের ক্যালসিয়ামের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে শরীরের হাড়ের কাঠামো মজবুত ও শক্ত হয় এবং হাড়ের ক্ষয় রোধ হয়। প্রতিদিন সকালে একটি সেদ্ধ ডিম খেলে প্রায় ৪৫ আন্তর্জাতিক ইউনিট ভিটামিন ডি পাওয়া যায়, যা হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে অপরিহার্য।

৩. প্রোটিনের দারুণ উৎস
সেদ্ধ ডিমে প্রাকৃতিকভাবেই প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন আছে। সকাল বেলায় খাবারে একটি সেদ্ধ ডিম খেলে ৬ গ্রামেরও বেশি প্রোটিন পাওয়া যায়। প্রোটিন শরীরের কোষ গঠন, মেরামত এবং সামগ্রিক বৃদ্ধি ও বিকাশের জন্য অত্যন্ত জরুরি।

৪. চোখের স্বাস্থ্য উন্নত করে
ডিমের একটি প্রধান খাদ্য উপাদান হলো ভিটামিন এ। ভিটামিন এ রেটিনায় আলো শুষে নিতে সহায়তা করে, কর্নিয়ার পাশের মেমব্রেনকে রক্ষা করে এবং রাতকানা রোগের ঝুঁকি কমায়। প্রতিদিন সকালে একটি সেদ্ধ ডিম আপনার খাদ্যতালিকায় ৭৫ মাইক্রোগ্রাম ভিটামিন এ যোগ করে, যা চোখের সুস্থতার জন্য উপকারী।

৫. দেহের ওজন নিয়ন্ত্রণ করে
দেহের ওজন নিয়ন্ত্রণে ডিমের উপকারিতা অনেক। যারা পেশীর ওজন বৃদ্ধি করতে চান, তাদের জন্য প্রোটিন সমৃদ্ধ ডিম একটি উপযুক্ত খাবার। গবেষণায় দেখা গেছে, ডিম আমাদের দেহে ঘন ঘন ক্ষুধা লাগাকে কমিয়ে দিয়ে দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। তাই সকালের খাবারে একটি সেদ্ধ ডিম ওজন কমানোর যাত্রায় বেশ উপকারী হতে পারে।

৬. মস্তিষ্কের জন্য উপকারী
ডিমে প্রচুর পরিমাণে কোলিন আছে, যা নিউরোট্রান্সমিটার হিসেবে কাজ করে আমাদের দেহকে সুস্থ রাখে। ডিম আমাদের মস্তিষ্কের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে থাকে। তাছাড়া, ডিমের কুসুমে থাকা ফোলেট উপাদান আমাদের মস্তিষ্কের ভেতরের স্নায়ু কোষের রক্ষণাবেক্ষণ করে, যা মস্তিষ্কের কার্যকারিতা উন্নত করে।

৭. নখ ও চুলের স্বাস্থ্য উন্নত করে
ডিমে আছে সালফার সমৃদ্ধ অ্যামিনো অ্যাসিড, যা কেবল আমাদের হাতের নখের স্বাস্থ্যই উন্নত করে না, চুলের গোড়া মজবুত করে ও চুলকে আকর্ষণীয় করে তোলে। ডিমের অন্যান্য খনিজ পদার্থ যেমন সেলেনিয়াম, আয়রন ও জিঙ্ক দেহের নখ ও চুলের স্বাস্থ্য রক্ষার্থে সহযোগিতা করে।

সুতরাং, প্রতিদিনের নাস্তায় একটি সেদ্ধ ডিম যোগ করে আপনি আপনার শরীরকে কেবল শক্তিশালীই করছেন না, বরং দীর্ঘমেয়াদী সুস্বাস্থ্যের পথে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিচ্ছেন।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy