সুস্থ জীবনযাপন এবং নীরোগ শরীর বজায় রাখার জন্য স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করা অত্যাবশ্যক। তবে অস্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা, অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাসের পাশাপাশি রান্নার কিছু ভুল পদ্ধতিও শরীরে বিভিন্ন রোগের জন্ম দিতে পারে। তাই সুস্থ থাকতে শরীরচর্চা ও সঠিক খাদ্যাভ্যাসের পাশাপাশি রান্না করার সময়ও কিছু ভুল এড়িয়ে যাওয়া জরুরি।
লুচি, মাছ বা অন্যান্য ভাজাভুজি করার সময় কড়াইতে অনেক তেল অবশিষ্ট থেকে যায়। তেলের আকাশছোঁয়া দামের কারণে অনেকেই সেই তেল ফেলে দিতে দ্বিধা বোধ করেন এবং পুনরায় সেই পোড়া তেলেই রান্না করেন।
কিন্তু পোড়া তেলের পুনর্ব্যবহার আদৌ কতটা স্বাস্থ্যকর?
চিকিৎসকরা স্পষ্ট জানাচ্ছেন, পোড়া তেল দিয়ে রান্না করা খাবার স্বাস্থ্যের জন্য একেবারেই ভালো নয়। এর ফলে শরীরে নানা ধরনের জটিল সমস্যা দেখা দিতে পারে।
আসুন, জেনে নেওয়া যাক পোড়া তেলে রান্না করা খাবার শরীরে কী কী সমস্যা ডেকে আনতে পারে:
রক্তচাপ বৃদ্ধি করে: পোড়া তেলের রাসায়নিক গঠন সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তিত হয়। এতে ক্ষতিকর ফ্যাটি অ্যাসিড তৈরি হয়, যা শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। বারবার পোড়া তেলে রান্না করা খাবার খাওয়ার অভ্যাসে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস, মানসিক উদ্বেগ এবং বদহজমের মতো বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে।
অ্যাসিডিটি ও বদহজম: একবার ব্যবহৃত তেল দিয়ে রান্না করা খাবার অ্যাসিডিটি, বুকজ্বালা এবং পেটের গন্ডগোলের মতো স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হতে পারে। রাস্তার অনেক মুখরোচক ভাজাভুজি খাবার প্রায়শই এই ধরনের পোড়া তেল দিয়েই তৈরি হয়। তাই বাইরের খাবার খাওয়ার ক্ষেত্রেও সচেতন থাকা প্রয়োজন।
কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ায়: পোড়া তেলে রান্না করা খাবার খেলে শরীরে ক্ষতিকর ফ্যাটি অ্যাসিডের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। শরীরে চর্বির পরিমাণ বাড়লে হৃদরোগের ঝুঁকি তৈরি হয়। হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখতে পোড়া তেলে রান্না করা খাবার সম্পূর্ণরূপে পরিহার করা উচিত এবং অল্প তেলে রান্না করা খাবার খাওয়া উচিত।
ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়: রান্না করা তেল পুনরায় গরম করার ফলে পলিসাইক্লিক অ্যারোমেটিক হাইড্রোকার্বন এবং অ্যালডিহাইডের মতো ক্ষতিকারক পদার্থের উপস্থিতি বেড়ে যায়। এই পদার্থগুলি শরীরে প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে এবং এমনকি ক্যান্সারের মতো মারাত্মক রোগের ঝুঁকিও বৃদ্ধি করে।
অতএব, আর্থিক সাশ্রয় করার জন্য পোড়া তেলে রান্না করার অভ্যাস ত্যাগ করা উচিত। নিজের এবং পরিবারের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য সর্বদা টাটকা তেল ব্যবহার করে রান্না করুন। ভাজাভুজি খাবার কম খান এবং স্বাস্থ্যকর রান্নার পদ্ধতি অনুসরণ করুন।