‘সম্পর্ক’—খুবই ছোট্ট একটি শব্দ, কিন্তু এর অভিঘাত গভীর। জন্মলগ্ন থেকেই নানা মানুষের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক গড়ে ওঠে—মা-বাবা, ভাইবোন, আত্মীয়-স্বজন। কিছু সম্পর্ক চিরস্থায়ী হলেও, অনেক সম্পর্কই হয়ে ওঠে জটিল এবং ভঙ্গুর। ভালোবাসার গভীরতা থাকা সত্ত্বেও অনেক সময় ঠুনকো অভিমানের কারণেও সম্পর্ক ভেঙে যায়। কিছু সম্পর্ক ভেঙে গেলেও পরে হয়তো জোড়া লাগে, আবার অনেক ক্ষেত্রে সেটাও হয় না। সব সম্পর্কেই খারাপ সময় আসে; মজবুত সম্পর্ক সেই খারাপ সময় পার করে যায়। মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, বন্ধন সুদৃঢ় করতে কখনও কখনও কিছু ‘সাদা মিথ্যা’ বলা দোষের নয়, বরং সংসার সুখের হতে পারে মিথ্যার গুণেই! শুধু দম্পতিই নয়, এই আটটি মিথ্যা প্রেমের সম্পর্ককেও মজবুত রাখতে পারে। চলুন জেনে নেওয়া যাক সেই ‘সাদা মিথ্যা’গুলো কী কী।
১. ‘হক কথা’ বলা (যদি তা নাও হয়):
অনেক সময় সঙ্গী বা সঙ্গিনীর সব কথা সঠিক নাও হতে পারে। কিন্তু পরিস্থিতি বুঝে তা এড়িয়ে গিয়ে উল্টোটা বলাই বুদ্ধিমানের কাজ! এতে অপ্রয়োজনীয় বিতর্ক এড়ানো যায়।
২. ‘রান্না দারুণ হয়েছে’ (খারাপ হলেও):
হতেই পারে, সঙ্গী বা সঙ্গিনীর রান্না আপনার পছন্দ হলো না। সেক্ষেত্রে সরাসরি সত্যিটা বললে অন্যজনের খারাপ লাগবে। তাই প্রথমবার মিথ্যা বলাই ভালো! তবে এটা রোজকার ব্যাপার হলে তখন ‘এক রান্না প্রতিদিন ভালো লাগছে না’ – এভাবে কাজ সারা যেতে পারে, যাতে তাকে আঘাত না করা হয়।
৩. উপহারের প্রশংসা (পছন্দ না হলেও):
সঙ্গী বা সঙ্গিনী কোনো উপহার দিলে, সেটা পছন্দ না হলেও তার প্রশংসা করাই নিয়ম। এক্ষেত্রে কলহ এড়ানো যায় এবং সম্পর্কে সুখ বজায় থাকে। উপহারদাতার প্রচেষ্টাকে সম্মান জানানো গুরুত্বপূর্ণ।
৪. ‘ভালো না লাগলেও ছবি দেখুন’:
সঙ্গী বা সঙ্গিনী একসঙ্গে কোনো ছবি দেখতে চাইলে, সেটা আপনার যত অপছন্দই হোক না কেন, সরাসরি ‘না’ বলা ঠিক হবে না। বরং এ ব্যাপারে আগ্রহ দেখানোই ঠিক হবে। এতে দু’জনের মধ্যে বন্ধন বাড়ে।
৫. ‘দারুণ লাগছে দেখতে’:
একে অপরের প্রশংসা সম্পর্কের ভিত মজবুত রাখে। তাই সঙ্গী বা সঙ্গিনী নতুন কিছু পরলে, সেটা তাকে মানাক বা না মানাক, সত্যিটা বলা যাবে না! বলতে হবে, ‘তোমাকে ভালো লাগছে’। ছোট ছোট প্রশংসা সম্পর্ককে সজীব রাখে।
৬. ‘রসিকতার প্রশংসা’ (হাসি না পেলেও):
সঙ্গী বা সঙ্গিনীর কোনো রসিকতায় হয়তো আপনার হাসি পেল না! কিন্তু সেটা প্রকাশ করলে তার বুদ্ধিমত্তাকে অপমান করা হয়। তাই রসিকতায় সমর্থন জানিয়ে হাসাই ভালো! এতে সম্পর্ক উষ্ণ থাকে।
৭. ‘পরিবারের প্রশংসা’ (যদি অপছন্দও হয়):
সঙ্গী বা সঙ্গিনীর পরিবারের কোনো সদস্যকে আপনার অপছন্দ হতেই পারে। কিন্তু তিনি যদি ঘরোয়া কোনো অনুষ্ঠানে যেতে চান, সেক্ষেত্রে ফিরে এসে তার পরিবারের সদস্যদের নিন্দা না করাই ঠিক হবে। এতে আপনার সঙ্গীকে অপমান করা হয় এবং সম্পর্কে ফাটল ধরতে পারে।
এই আটটি ‘সাদা মিথ্যা’ আপাতদৃষ্টিতে মিথ্যা মনে হলেও, আসলে এগুলি সম্পর্কের সংবেদনশীলতা, পারস্পরিক সম্মান এবং ভালোবাসাকেই প্রতিফলিত করে। সম্পর্ককে মজবুত রাখতে ছোটখাটো বিষয়গুলি এভাবেই যত্ন নিতে হয়।