সবার জন্য উপকারী নয় রসুন, জেনে নিন কাদের জন্য এটি ক্ষতিকর হতে পারে

রসুনকে প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক এবং অত্যন্ত উপকারী একটি ভেষজ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ছোট থেকে বড় অনেক রোগ থেকে দূরে রাখতে এটি সাহায্য করে। তবে সবার জন্য যে এটি সমান উপকারী, তা কিন্তু নয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে রসুন শরীরের জন্য ক্ষতিকরও হতে পারে।

আমেরিকার ন্যাশনাল ক্যান্সার ইনস্টিটিউট-এর একটি গবেষণা অনুযায়ী, খালি পেটে কাঁচা রসুন খেলে অনেকেরই অ্যাসিডিটি বা বমিভাবের সমস্যা হতে পারে। অতিরিক্ত রসুন খাওয়ার কারণে হাইফিমা নামক চোখের সমস্যা এবং রক্তক্ষরণও হতে পারে। হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের গবেষণায়ও জানা গেছে, রসুনে থাকা কিছু উপাদান জিইআরডি-এর মতো পেটের সমস্যা বাড়িয়ে দিতে পারে।

তাহলে কাদের রসুন খাওয়া উচিত নয়? চলুন জেনে নেওয়া যাক:

১. গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী মা:
গর্ভবতী মহিলাদের জন্য রসুনকে নিরাপদ বলা যায় না, কারণ এটি প্রসব বেদনা বাড়িয়ে দিতে পারে। যেসব মা শিশুদের বুকের দুধ খাওয়ান, তাদেরও রসুন এড়িয়ে চলতে বলা হয়, কারণ রসুন খেলে বুকের দুধের স্বাদ পরিবর্তিত হতে পারে।

২. যকৃতের সমস্যা থাকলে:
আমাদের যকৃত শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিন্তু অতিরিক্ত রসুন খেলে তাতে থাকা ‘অ্যালিসিন’ নামক উপাদান যকৃতে বিষক্রিয়া তৈরি করতে পারে। তাই যকৃতের সমস্যায় ভুগছেন এমন ব্যক্তিদের রসুন খাওয়ার বিষয়ে সতর্ক থাকা উচিত।

৩. নিম্ন রক্তচাপের সমস্যা:
অতিরিক্ত রসুন খাওয়ার ফলে রক্তচাপ কমে যেতে পারে, যা মাথা ঘোরা, দুর্বলতা এবং বমির কারণ হতে পারে। তাই যাদের লো ব্লাড প্রেশার রয়েছে, তাদের অতিরিক্ত রসুন খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত।

৪. ডায়রিয়া ও পেটের সমস্যা:
রসুনে থাকা সালফার পেটে গ্যাস তৈরি করতে পারে, যা কারও কারও ক্ষেত্রে ডায়রিয়ার মতো পেটের সমস্যার কারণ হয়। যারা প্রায়শই পেটের সমস্যায় ভোগেন, তাদের জন্য রসুন উপকারী নাও হতে পারে।

৫. মুখের সংক্রমণ:
রসুনে থাকা সালফারের কারণে এটি খাওয়ার পর মুখে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয়। তাই যারা মুখের নানা সংক্রমণে ভুগছেন, তাদের রসুন এড়িয়ে চলাই ভালো।

৬. অতিরিক্ত ঘাম:
কারও কারও ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ধরে রসুন খাওয়ার কারণে অতিরিক্ত ঘামের সমস্যা দেখা দিতে পারে, যা শরীর থেকে দুর্গন্ধের সৃষ্টি করতে পারে। তাই স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ঘামের প্রবণতা থাকলে রসুন খাওয়া কমিয়ে দেওয়া উচিত।

যেকোনো খাবার নিয়মিত খাওয়ার আগে, বিশেষ করে যদি স্বাস্থ্যগত কোনো সমস্যা থাকে, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy