বর্তমান যুগে প্রায় প্রতিটি বাবা-মা তাদের সন্তানের মোবাইল ও টিভির প্রতি আসক্তি নিয়ে চিন্তিত। তবে জানেন কি, কিছু সাধারণ অভ্যাসের পরিবর্তনেই এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব? আপনার সন্তানও হয়ে উঠতে পারে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী। তবে রাতারাতি কোনো অভ্যাস পরিবর্তন সম্ভব নয়। শিশুদের যেহেতু নিজেদের ভাল-মন্দ বোঝার ক্ষমতা কম থাকে, তাই তারা বাবা-মায়ের উপর অনেক বেশি নির্ভরশীল। চলুন, জেনে নেওয়া যাক ধীরে ধীরে কীভাবে আপনার সন্তানের মোবাইল ও টিভির নেশা দূর করবেন:
প্রথমত, আপনাকে অনেক বেশি ধৈর্যশীল হতে হবে। একদিনেই আপনার সন্তান টিভি বা মোবাইলের প্রতি আগ্রহ হারাবে না। তাকে এই অভ্যাস পরিবর্তনের জন্য যথেষ্ট সময় দিতে হবে।
নির্দিষ্ট সময়ে খাবার গ্রহণ: আপনার সন্তানকে একটি নির্দিষ্ট সময়ে খাবার দিন এবং খাবার শেষ করার সময়ও বেঁধে দিন। আপনি নিজেও একই টেবিলে সন্তানের পাশে বসে খাবার খান। ঘড়ি ধরে খাবার শেষ করে হাত ধুয়ে ফেলুন। এতে আপনার সন্তানেরও সময় মেনে খাবার খাওয়ার আগ্রহ জন্মাবে। খাবার সময় আপনার সন্তানকে টিভি বা মোবাইলে ব্যস্ত থাকতে দেবেন না। একইসাথে, আপনি নিজেও বা পরিবারের অন্য কোনো সদস্য সেই সময় মোবাইল বা টিভি দেখবেন না। মনে রাখবেন, বাড়িটই শিশুর প্রথম এবং অন্যতম প্রধান শিক্ষালয়।
পারিবারিক সময় বরাদ্দ করুন: বর্তমানে আমরা অনেকেই কর্মব্যস্ত। অফিস এবং বাড়ির কাজের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখাই কঠিন হয়ে পড়ে। একই বাড়িতে থেকেও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সময় কাটানো অনেকের পক্ষেই সম্ভব হয় না। তবে সন্তানের কথা ভেবে আপনার ব্যস্ততাকে কিছুটা দূরে সরান। দুপুরে সম্ভব না হলেও রাতে পরিবারের সকলে একসঙ্গে খেতে বসুন। আপনার বাড়ির ছোট সদস্যটিকেও সেই সময়েই খাবার দিন। দেখবেন, সকলের সঙ্গে খাওয়ার সময় সে মোবাইল বা টিভির কথা ভুলে গেছে। এতে তার সঠিকভাবে খাওয়ার অভ্যাস তৈরি হওয়ার পাশাপাশি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে তার সম্পর্কের বাঁধনও দৃঢ় হবে।
ধৈর্য ধরে এবং নিয়মিত এই অভ্যাসগুলি অনুসরণ করলে আপনার সন্তানের মোবাইল ও টিভির প্রতি আসক্তি ধীরে ধীরে কমতে শুরু করবে এবং সে একটি স্বাস্থ্যকর জীবনধারায় অভ্যস্ত হবে। মনে রাখবেন, সন্তানের ভালোর জন্য সময় এবং ধৈর্য বিনিয়োগ করা অপরিহার্য।