নাক ডাকার সমস্যা আমাদের মধ্যে অনেকেরই রয়েছে। তবে যিনি নাক ডাকেন তিনি নিজে ভোগান্তির শিকার হন না। কারণ তিনি নিজের অজান্তেই ঘুমের মধ্যে নাক ডাকেন। কিন্তু তার পাশে যিনি ঘুমান তাকে এর জন্য সমস্যা পোহাতে হয়। দেখা যায়, সঙ্গীর নার ডাকার যন্ত্রণায় রাতের ঘুমের ১২ বেজে যায়।
শুধু আপনি কিংবা আপনার সঙ্গী নয়, প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে ৪৫ শতাংশ মানুষ নাক ডাকার সমস্যায় ভুগেন। এই নাক ডাকার কারণে পরিবারসহ বন্ধু মহলেও হাসি-ঠাট্টার পাত্র হতে হয়।
অনেকেই এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে থাকেন। তবে শুধু ওষুধ খেয়ে নয় বরং সচেতনতার মাধ্যমেও এ সমস্যার সমাধান করা যায়।
এডিসনের জেএফকে মেডিকেল সেন্টারের ক্লিনিক্যাল নিউরোফিজিওলজি এবং স্লিপ মেডিসিনের প্রোগ্রাম ডিরেক্টর সুধানসু চক্রোভার্টি (এমডি, এফআরসিপি, এফএসিপি) বলেন, অনেকেই না জেনে বুঝে নাক ডাকার সমস্যার সমাধানে বাজারের বিভিন্ন পণ্য ব্যবহার করে থাকেন। যা বৈজ্ঞানিক উপায়ে তৈরি নয়। এসবের ব্যবহার এড়িয়ে চলা উচিত। তার চেয়ে বরং প্রাকৃতিক উপায়ে এ সমস্যার সমাধান করুন।
তিনি পরামর্শ দিয়েছেন কীভাবে প্রাকৃতিক উপায়ে নাক ডাকার সমস্যা সমাধান করা যায়। চলুন তবে জেনে নেয়া যাক সেই উপায়গুলো-
>> সবসময় হাইড্রেট থাকতে পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করুন। এতে নাক ডাকার পরিমাণ কমবে। শরীর ডিহাইড্রেশনের শিকার হলে নাক ডাকার পরিমাণ বাড়ে। ইনস্টিটিউট অব মেডিসিনের মতে, সুস্থ নারীদের প্রতিদিন ১১ কাপ এবং পুরুষদের ১৬ কাপ জল পান করা উচিত।
>> আপনার ঘুমের অবস্থান পরিবর্তন করুন। যারা চিৎ হয়ে ঘুমান, তাদের জিহ্বা এবং গলার নরম তালু শুকিয়ে গিয়ে ঘুমের সময় কম্পনের শব্দ সৃষ্টি করে। এর ফলে নাক ডাকার শব্দ বেড়ে যায়। এজন্য চিৎ হয়ে শোয়া এড়িয়ে বরং যেকোনো দিকে কাঁত হয়ে ঘুমানোর অভ্যাস গড়ুন।
>> যারা অতিরিক্ত ওজনে ভুগছেন, তাদের ক্ষেত্রেও ঘুমের মধ্যে নাক ডাকার প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। বিশেষ করে ঘাড় ও গলায় বেশি চর্বি জমলে এ সমস্যাটি বেড়ে যায়। কারণ এমন ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে ঘুমের সময় গলার অভ্যন্তরীণ ব্যাস সংকীর্ণ হয়ে আসে। এর ফলে নাক ডাকা শুরু হয়।
>> যারা নিয়মিত মদ্যপান করেন, তাদের গলার পেছনের পেশির স্বর কমে আসে। যার ফলে আপনি নাক ডাকতে পারেন। বিশেষ করে ঘুমানোর ৪ থেকে ৫ ঘণ্টা আগে অ্যালকোহল পান করলে নাক ডাকার সমস্যা আরো বেড়ে যায়।
>> ভালো ও গভীর ঘুম হলে নাক ডাকার সমস্যাও কমে যায়। পর্যাপ্ত ঘুম ছাড়া দীর্ঘ সময় কাজ করা ও অতিরিক্ত ক্লান্ত হয়ে যখন কেউ ঘুমিয়ে পড়ে; তখন মুখে ও গলার পেশীগুলো ফ্লপপিয়ার হয়ে যায়। যা নাক ডাকার সৃষ্টি করে।
>> অনেক সময় সর্দি লাগার কারণে নাক বন্ধ হয়ে থাকলে, নাক ডাকা শুরু হয়। এজন্য নাসারন্ধ্র খোলা রাখতে ভাঁপ গ্রহণ করুন। মেন্থল ব্যবহারেও দ্রুত নাক খুলে যাবে সর্দি লাগলে।
>> আপনার বালিশ পরিবর্তন করার মাধ্যমেও নাক ডাকার সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। অনেক সময় বালিশে বিদ্যমান অ্যালার্জেন আপনার নাক ডাকার কারণ হতে পারে। কারণ বালিশে সহজেই ধুলাবালি জমা হয় এবং অ্যালার্জি প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। এ কারণে বালিশের কভারটি পরিষ্কার রাখুন।