সুন্দর, লম্বা ও ঘন চুল সকলেরই কাম্য। তবে দূষণ, খাদ্যাভ্যাস এবং অযত্নের কারণে অনেকেরই চুল সহজে লম্বা হতে চায় না বা অতিরিক্ত পরিমাণে ঝরে যায়। তবে হতাশ হওয়ার কিছু নেই! কয়েকটি সহজ টিপস মেনে চললে আপনিও পেতে পারেন দ্রুত লম্বা এবং স্বাস্থ্যোজ্জ্বল চুল। পাশাপাশি কমে যাবে চুল পড়ার সমস্যাও।
চুল সহজে না বাড়ার নেপথ্যে: চুল ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাওয়ার অথবা ঝরে যাওয়ার পেছনে একাধিক কারণ থাকতে পারে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো:
অতিরিক্ত মানসিক চাপ (স্ট্রেস)।
শরীরের হরমোনের পরিবর্তন।
খাদ্যে প্রয়োজনীয় পুষ্টির অভাব।
অতিরিক্ত চুল ঝরে যাওয়া।
পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব।
চুলের সঠিক যত্নের অভাব।
নির্দিষ্ট কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া।
ক্ষতিকর রাসায়নিক (কেমিক্যাল) যুক্ত শ্যাম্পুর ব্যবহার।
দ্রুত চুল লম্বা করার সহজ উপায়: একটু সচেতন হলেই দ্রুত চুল লম্বা করা সম্ভব। নিচে তেমনই কিছু কার্যকরী টিপস দেওয়া হলো:
১. তেল ম্যাসাজ: সপ্তাহে অন্তত দুবার চুলে হালকা গরম তেল ম্যাসাজ করুন। এটি মাথার ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে, যা চুলের দ্রুত বৃদ্ধিতে সহায়ক। এছাড়াও, তেল চুলের রুক্ষতা দূর করে এবং ঝলমলে ভাব ফিরিয়ে আনে। নারিকেল তেল, অলিভ অয়েল, আমন্ড অয়েল, ক্যাস্টর অয়েল এবং ভিটামিন ই তেল চুলের জন্য খুবই উপকারী।
২. পর্যাপ্ত ঘুম: সুস্থ শরীরের পাশাপাশি চুলের বৃদ্ধির জন্যও পর্যাপ্ত ঘুম অপরিহার্য। প্রতিদিন ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুমানো প্রয়োজন। ঘুমের অভাব চুলের স্বাস্থ্যকে দুর্বল করে তোলে।
৩. সুষম খাদ্য গ্রহণ: চুলের স্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য সুষম খাদ্যের কোনো বিকল্প নেই। ভিটামিন এ, বি, ই, প্রোটিন এবং ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার আপনার খাদ্য তালিকায় যোগ করুন।
৪. নিয়মিত চুলের আগা ছাঁটা: অনেকেই মনে করেন চুলের আগা ছাঁটলে চুল লম্বা হতে বেশি সময় লাগে। তবে এটি ভুল ধারণা। বরং দুই মাসে একবার চুলের আগা ছেঁটে ফেললে চুলের ডগা ফাটা রোধ হয় এবং চুল দ্রুত লম্বা হতে সাহায্য করে।
৫. রাতে চুল আঁচড়ানো ও ম্যাসাজ: রাতে ঘুমানোর আগে মোটা দাঁতের চিরুনি দিয়ে আলতোভাবে চুল আঁচড়ান। এরপর আঙুলের সাহায্যে মাথার ত্বক ম্যাসাজ করুন। এতে মাথার ত্বকের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায়।
৬. ইয়োগা ও ব্যায়াম: নিয়মিত ইয়োগা ও হালকা ব্যায়াম কেবল শরীরের জন্যই নয়, চুলের স্বাস্থ্যের জন্যও উপকারী। এটি স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে এবং রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে, যা চুলের বৃদ্ধিতে সহায়ক।
৭. প্রাকৃতিক উপাদানের ব্যবহার: চুলের যত্নে ক্ষতিকর কেমিক্যাল যুক্ত প্রসাধনীর পরিবর্তে প্রাকৃতিক উপাদান বেছে নিন। অ্যালোভেরা, মেথি, রিঠা এবং ডিমের প্যাক সপ্তাহে এক বা দুই দিন ব্যবহার করতে পারেন। এগুলো চুলের গোড়া মজবুত করে এবং চুলকে ঝলমলে করে তোলে।
এই সহজ টিপসগুলো মেনে চললে আপনি অবশ্যই দ্রুত লম্বা এবং স্বাস্থ্যোজ্জ্বল চুল ফিরে পাবেন। তাই আর অপেক্ষা না করে আজ থেকেই শুরু করুন চুলের সঠিক যত্ন।