রেস্টুরেন্টে যখন কোনো জুটি খেতে যায়, খাওয়া শেষে ওয়েটার কিন্তু বিলের কাগজ ছেলেটির হাতে নিয়েই তুলে দেয়। কারণ সে এমনটাই দেখে অভ্যস্ত। কখনো কোনো মেয়ে যদি ওয়ালেট খুলে বিল ধরিয়ে দেয়, তবে তাদের চোখ যেন ছানাবড়া হয়ে যায়! এমনটা আবার হয় নাকি? কখনো যে হয় না, তা নয়। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই রেস্টুরেন্টে খাওয়ার পরে ছেলেদেরকেই বিল দিতে দেখা যায়। কখনো কি ভেবে দেখেছেন, কেন? ছেলেটি প্রতিষ্ঠিত আর মেয়েটি শিক্ষার্থী হলে কারণটা তো বোঝাই যায়। কিন্তু দুজনেই যদি বেকার বা দুজনেই যদি উপার্জনক্ষম হয়, তবুও ছেলেটি কেন বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বিল দিয়ে থাকে? চলুন জেনে নেওয়া যাক, সম্ভাব্য কারণগুলো-
স্বভাবসুলভ কর্তৃত্ব
সামাজিক এবং প্রাকৃতিকভাবে ছেলেদের স্বভাবে কর্তৃত্ব দেওয়ার কিছু বৈশিষ্ট্য থাকে। সেই চর্চাই তারা সব জায়গায় ধরে রাখতে চায়। দুজনে খেতে গিয়ে প্রেমিকা বিল দেবে, এতে তাদের কর্তৃত্ব বজায় রাখা কঠিন হতে পারে বলে মনে হতে পারে। তাই নিজের আয় থাকুক বা না থাকুক, তারা চায় না যে প্রেমিকা বিল দিক। তবে কিছু ছেলে থাকে যারা মেয়েদের টাকা খরচ করতে পছন্দ করে, তারা যে খুব উদারমনা এমনটাও নয়। আসলে তারা কঞ্জুস প্রকৃতির বলে অন্যের টাকায় খেতে ভালোবাসে, হোক সে ছেলে কিংবা মেয়ে।
মেয়েদের কম আত্মনির্ভরশীলতা
মেয়েরা বিল কম দেওয়ার আরেকটি বড় কারণ হতে পারে তাদের আত্মনির্ভরশীলতা না থাকা বা কম থাকা। এই আত্মনির্ভরশীলতা যে শুধু উপার্জন করলেই সৃষ্টি হয়, তা কিন্তু নয়। অনেক চাকুরিজীবী বা ব্যবসায়ী মেয়েও বিল দেওয়ার জন্য ওয়ালেট বের করতে অভ্যস্ত নয়। আসলে এই সাহসই তাদের মনে থাকে না। আর এই সাহস না থাকাই হলো আত্মনির্ভরশীলতার অভাব। তারা ধরেই নেয় যে, সঙ্গী ছেলেটি বিল দিতে বাধ্য, তারা নয়।
প্রচলিত ধারণা
ছেলেরাই কেন বিল দেবে, এর আরেকটি কারণ হলো প্রচলিত ধারণা। মেয়েরা বড় হতে হতে এমনটা দেখে, ছেলেরাও এমনটাই দেখে বড় হয়। যে কারণে তাদের দুজনের মনেই এই ধারণা জন্মায় যে, এমনটাই হতে হবে। আর সেই ধারণার কারণেই ছেলেরা বিল দিয়ে যায়, মেয়েরা তা স্বাভাবিক হিসেবেই দেখে।
ইগো ধরে রাখা
ছেলেরা মনে করে, প্রেমিকার টাকায় বিল দিলে সেটি তার ইগো নষ্ট করতে পারে। মেয়েরা মনে করে, একজন সুন্দরী নারী ছেলেটিকে সঙ্গ দিচ্ছে এই কি যথেষ্ট নয়? এর সঙ্গে বাড়তি খরচ হিসেবে বিল গুনতে হলে সেটি তারা নিজের অযোগ্যতা বলে মনে করে। তার বান্ধবীদের প্রেমিকও হয়তো একইভাবে বিল দিয়ে থাকে। তারা এমনটাই দেখে এবং শিখে অভ্যস্ত, এর থেকে বাইরে বের হতে পারে না।
এবং অন্যান্য
হতে পারে নিজেকে প্রমাণের চেষ্টা, নিজের ভালোবাসা কতটা খাঁটি তা জানানোর চেষ্টা, হতে পারে আরও নানা কারণ। তবে দুজন মানুষ যখন সম্পর্কে জড়ায়, তাদের মধ্যে বোঝাপড়াটাও চমৎকার হওয়া উচিত। পরস্পরের সামর্থ্য বুঝে তবেই প্রত্যাশা করা উচিত। শুধু অর্থ উপার্জনই নয়, মানসিক সামর্থ্যও অনেক বড় বিষয়। যারা এভাবে পরস্পরের জন্য ভাবে, তাদের সম্পর্ক সহজে নষ্ট হয় না।