সারাদিনের ব্যস্ততার পরে সন্ধ্যা হলেই যেন ক্লান্তি ঘিরে ধরে। বাসায় ফিরে বিছানায় গা এলিয়ে একটু গড়াগড়ি, আলসেমি, বাসার কাজ করতে করতেই কখন সময় গড়িয়ে যায়, টেরও পাওয়া যায় না। নাগরিক জীবনে নানা অভ্যাসের কারণে তাই রাতের খাবারটা দেরি করে খাওয়ার রীতি গড়ে ওঠে।
কিন্তু জীবনযাপনের এই ধারাই আমাদের কত বড় বিপদের দিকে ঠেলে দিচ্ছে তা আমরা বুঝতে পারছি না। এই অভ্যাসের কারণে শরীরে বাসা বাধছে ভয়ানক সব অসুখ। বদহজম, গ্যাস্ট্রিক তো আছেই, তাছাড়াও নানা জটিল অসুখের শিকার হতে পারেন এই কারণে।
বিভিন্ন দেশের গবেষণা ও চিকিৎসকদের পরামর্শ ইঙ্গিত বলে দিচ্ছে, এমন অভ্যাসে ভালো নেই আপনার শরীর। দূরারোগ্য ব্যাধিও দূরে নেই।
বিখ্যাত জার্নাল ‘অ্যাডভান্সেস ইন নিউট্রিশন’-এর প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে একদল চিকিৎসক দাবি করেছেন, বেশি রাতে মশলাযুক্ত খাবার খেলে টাইপ ২ ডায়াবিটিসের সম্ভাবনা বহুলাংশে বাড়ে।
পেনসিলভেনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘পেরেলম্যান স্কুল অব মেডিসিন’-এর চিকিৎসকেরা দেখিয়েছেন, বেশি রাতে খাওয়ার ফলেই বেড়ে যায় কোলেস্টরেলের মাত্রা। ফলে কয়েক গুণ বেড়ে যায় হার্টের অসুখের আশঙ্কা। এমনকি, ঘুমের মধ্যে যে কোনো সময় হার্ট অ্যাটাকও হতে পারে।
গবেষণায় দেখা গিয়েছে দীর্ঘ দিন বেশি রাতে খাওয়ার ফলে স্মৃতিজনিত সমস্যাও হতে পারে।
ক্লান্ত শরীরে মানুষের খাদ্যগ্রহণের পরিমাণ বেড়ে যায়। বেশি রাতে, ক্লান্ত শরীরে যারা খান, তারা স্বাভাবিকের থেকে ৩১৫ ক্যালোরি বেশি খেয়ে ফেলেন। ঘুমের দফারফা তো বটেই। এর ফলে ক্যালোরি ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমেরও দফারফা হয়। লাগামছাড়া ভাবে বাড়তে থাকে ওজন।
বেশি রাতে খেলে অ্যাসিডিটির সমস্যা অবধারিত। দীর্ঘদিনের এই অভ্যাস ডেকে আনে আলসারের মতো রোগ।