আজকালকার দ্রুতগতির জীবনে আমরা সবাই এত ব্যস্ত যে নিজের জন্য একটুও সময় বের করা কঠিন হয়ে পড়ে। এর ফলস্বরূপ, আমাদের ভেতরের প্রাণশক্তি ক্রমশ নিস্তেজ হয়ে যাচ্ছে এবং আমরা অলস হয়ে পড়ছি। দিনের শেষে ক্লান্তি আর মাথাব্যথা আমাদের নিত্যসঙ্গী হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
এই সমস্যাগুলো থেকে মুক্তি পেতে হলে দিনের মধ্যে অন্তত ৩০ মিনিট নিজের জন্য বের করার চেষ্টা করুন। যেখানেই থাকুন না কেন, এই মূল্যবান ৩০ মিনিট শুধু হাঁটার জন্য রাখুন। যদি বাইরে যাওয়া সম্ভব না হয়, তবে আপনার বাড়ির ছাদ বা বাগানেও হাঁটতে পারেন। মনে রাখবেন, এই সময়টা কোনো রকম ব্যায়াম নয়, শুধুমাত্র হাঁটার পিছনে ব্যয় করুন।
কিন্তু কেন হাঁটার উপর এত জোর দেওয়া হচ্ছে? আসুন, এর কারণগুলো জেনে নেওয়া যাক:
১. পেশীর শক্তি বৃদ্ধি: নিষ্ক্রিয় থাকার অর্থ হল শরীরে পেশীর শক্তি কমে যাওয়া। হাঁটার সময় আমাদের শরীরের সমস্ত পেশী সঞ্চালিত হয়। বিশেষত, এটি মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করে, যা আমাদের মস্তিষ্কের কোষগুলির বিকাশে সহায়ক।
২. সৃজনশীলতা ও বুদ্ধিমত্তার বিকাশ: যখন আপনি কোনো সমস্যা নিয়ে চিন্তিত, তখন হতাশ হয়ে বসে না থেকে কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করলে দ্রুত তার সমাধান পাওয়া যায়। বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে যে হাঁটা আমাদের সৃজনশীলতা এবং বুদ্ধিমত্তাকে বৃদ্ধি করে।
৩. পরিপাকতন্ত্রের উন্নতি: মানুষের পরিপাকতন্ত্রের জন্য হাঁটার চেয়ে ভালো ওষুধ আর কিছু নেই। খাওয়ার পরে কিছুক্ষণ হাঁটলে কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায় এবং ওষুধ খাওয়ার প্রয়োজন হয় না।
ব্যক্তিত্বের বিকাশ: আমাদের প্রত্যেকের ব্যক্তিত্বের কিছু বৈশিষ্ট্য থাকে এবং সক্রিয় থাকার সাথে সেগুলোর গভীর সম্পর্ক রয়েছে। গবেষণা বলছে, যারা নিষ্ক্রিয় থাকেন তারা তুলনামূলকভাবে কম উদার হন এবং তাদের স্নায়ু সংক্রান্ত বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। সক্রিয় জীবনযাপন এই সমস্যাগুলো থেকে মুক্তি দিতে পারে। তাই হাঁটার অভ্যাস গড়ে তোলা অপরিহার্য।
বিষণ্ণতা হ্রাস: সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে যে দীর্ঘক্ষণ বসে থাকার সাথে বিষণ্ণতার একটি যোগসূত্র রয়েছে। নিয়মিত হাঁটার ফলে আমাদের শরীরের ব্যায়াম হয় এবং মনও সতেজ থাকে, যা বিষণ্ণতা কমাতে সহায়ক।
সুতরাং, আর দেরি না করে আজ থেকেই নিজের জন্য ৩০ মিনিট সময় বের করুন এবং হাঁটতে শুরু করুন। সুস্থ জীবনযাপন আপনারই হাতে।