সুখী দাম্পত্যের সঙ্গে মোটা হওয়ার সম্পর্ক কী? এ প্রশ্নেরই উত্তর খুঁজেছেন একদল গবেষক। তাদের মতে, বিবাহিত জীবনে যেসব দম্পতি সুখী তারাই নাকি মোটা হন বেশি।
বেশ কয়েকটি গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, যেসব দম্পতি সম্পর্ক বা বিবাহিত জীবনে সুখী ও সন্তুষ্ট বলে জানিয়েছেন তাদের মধ্যে ওজন বাড়ার প্রবণতাও বেশি দেখা গেছে।
ইউনিভার্সিটি অব নর্থ ক্যারোলিনার একদল গবেষক ৮ হাজার জনেরও বেশি মানুষের ওজন পরিমাপ করেন। সমীক্ষায় দেখা যায়, একজন নারীর বিয়ের প্রথম ৫-৬ বছরে গড়ে ২৪ পাউন্ড পর্যন্ত ওজন বেড়েছে।
সমীক্ষায় আরও দেখা গেছে, অবিবাহিতদের তুলনায় বিবাহিত পুরুষের ওজন ২৫ পাউন্ড বেশি বাড়ার সম্ভাবনা আছে।
সমীক্ষার বিভিন্ন তথ্য ও উপাত্ত পর্যবেক্ষণ করে গবেষকরা জনান, ভালোবাসা ও স্থূলতার মধ্যে একটি শক্তিশালী সম্পর্ক আছে।
নতুন বিবাহিত দম্পতিদের ওজন বাড়ার কারণ ইতিবাচক বা নেতিবাচক প্রতিফলন কি না তা পরীক্ষার জন্য ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ একটি গবেষণা করে।
৪ বছরেরও বেশি সময় ধরে বিবাহিত দম্পতিদের মানসিক স্বাস্থ্য ও চাপের মাত্রা পরীক্ষা করেন গবেষকরা।
গবেষণায় দেখা যায়, যে দম্পতিরা বিবাহিত জীবনে সুখী নন তাদের তুলনায় বিবাহিত সুখী দম্পতিদের ওজন বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দ্বিগুণ ছিল।
তবে কেন দম্পতিরা মোটা হন? এ বিষয়ে গবেষকরা জানান, সুখী দম্পতিদের মধ্যে ওজন বাড়ার কারণ হলো তারা মানসিকভাবে একে অন্যের সঙ্গে থেকে সুখবোধ করেন। এমন দম্পতিরা সব বিষয়েই খুশি থাকেন।
অন্যদিকে যেসব দম্পতিরা অসুখী তারা সব সময় মানসিক চাপে ভোগেন। এর প্রভাব পড়ে শরীরেও। ফলে তাদের ওজন কমে যাওয়া ও স্বাস্থ্য খারাপ হওয়ার ঝুঁকিও বেশি।
নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিনের করা আরও এক গবেষণায় দেখা গেছে, বিবাহিত দম্পতিদের মধ্যেও ওজন বৃদ্ধি সংক্রামক। যদি একজন সঙ্গীর ওজন বাড়ে তবে অন্য অংশীদারেরও ওজন বাড়ার ঝুঁকি থাকা ৩৭ শতাংশ।
এর কারণ হলো তারা একে অপরের বিভিন্ন অভ্যাসের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেয়। তাদের খাদ্যাভ্যাসসহ জীবন ধারণ পদ্ধতিও একই ধরনের হয়।
অন্যদিকে যেসব দম্পতিরা অসুখী তারা যেহেতু একে অন্যের সঙ্গে খুব কম সময় কাটান, তাই তাদের খাদ্যাভ্যাসও ভিন্ন হয়।
গবেষণায় অংশ নেওয়া দম্পতিদের সামাজিক পরিবেশ, অভ্যাস ও পারস্পরিক ক্রিয়াকলাপ বিশ্লেষণ করে গবেষকরা জানান, পারস্পরিক ওজন বেড়ে যাওয়া উভয় ব্যক্তির খাদ্যাভ্যাস ও মানসিক অবস্থাকে প্রভাবিত করে।
তবে অতিরিক্ত ওজন আবার শরীরের জন্য ক্ষতিকর। তাই ওজন বাড়তে শুরু করলে তার লাগাম টেনে ধরাও কিন্তু জরুরি। না হলে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে।