বিয়ে শুধু দুটি মানুষের মিলন নয়, এটি একটি পবিত্র বন্ধন। জীবনের এই গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় শুরুর আগে প্রয়োজন মানসিক ও আর্থিক প্রস্তুতি। উইন্ডসোর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণা এই ধারণাকে আরও জোরালো করেছে। গবেষণাটি বলছে, বিয়ে বহু মানসিক সমস্যার সমাধানে ইতিবাচক ভূমিকা রাখে। বিশেষত নারী ও পুরুষের মানসিক অবসাদ এবং মাদকাসক্তির মতো সমস্যাগুলো বিয়ের মাধ্যমে কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। তবে প্রশ্ন হল, বিয়ের সঠিক সময় কোনটি?
এই বিষয়ে প্রখ্যাত সম্পর্ক বিষয়ক বিশেষজ্ঞ অড্রে হোপের মূল্যবান পরামর্শ উঠে এসেছে। তিনি মনে করেন, কলেজ বা হাই স্কুল শেষ করার পরপরই বিয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত নয়। তাঁর মতে, বিয়ের সেরা সময় তখনই আসে যখন একজন ব্যক্তি আর্থিকভাবে স্থিতিশীল হন এবং নিজের জীবন সম্পর্কে আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠেন।
সাম্প্রতিককালে বিশেষজ্ঞদের পর্যবেক্ষণে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ধরা পড়েছে। বর্তমান প্রজন্মের মধ্যে বিয়ের চেয়ে শারীরিক সম্পর্কের প্রতি ঝোঁক বেশি দেখা যায়। একে অপরের দায়িত্ব নেওয়ার মানসিকতা তাদের মধ্যে তুলনামূলকভাবে কম।
বিয়ের উপযুক্ত সময় নিয়ে বিশেষজ্ঞরা আরও আলোকপাত করেছেন। তাঁদের মতে, যেহেতু বিয়ে জীবনের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত, তাই অল্প বয়সে তাড়াহুড়ো করে কোনো সিদ্ধান্তে আসা উচিত নয়। মানসিক স্থিরতা আসার পরই জীবনের বড় সিদ্ধান্তগুলো নেওয়া উচিত, এবং বিয়ের ক্ষেত্রেও এই নিয়ম প্রযোজ্য।
বিশেষজ্ঞরা পুরুষ ও নারী উভয়ের ক্ষেত্রেই ২৫ থেকে ৩২ বছর বয়সকে বিয়ের জন্য উপযুক্ত বলে মনে করেন। তাঁদের যুক্তি, কম বয়সে বিয়ে করলে সেই সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। এর প্রধান কারণ হল, অপরিণত বয়সে সঠিক জীবনসঙ্গী নির্বাচনে ভুল হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
অন্যদিকে, যখন নারী ও পুরুষ উভয়েরই বয়স কিছুটা বেশি হয়, তখন তারা নিজেদের ভালো-মন্দ বুঝতে সক্ষম হন। আবেগের বশে না গিয়ে বাস্তবতার নিরিখে জীবনসঙ্গী নির্বাচন করতে পারেন।
অতএব, ২৫ বছরের কম বয়সে বিয়ের সিদ্ধান্ত এড়িয়ে যাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। একইসঙ্গে বিয়ের আগে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় অবশ্যই বিবেচনা করা উচিত। আপনার আর্থিক সংস্থান আছে কিনা, আপনি মানসিকভাবে প্রস্তুত কিনা এবং আপনি অন্য একজন মানুষের দায়িত্ব নিতে পারবেন কিনা – এই বিষয়গুলির প্রতি খেয়াল রাখা জরুরি। এই সমস্ত দিক বিবেচনা করার পরই বিয়ের সিদ্ধান্ত নিলে সুখী হওয়া সম্ভব।