মানুষ হিসেবে আমরা কেউই নিখুঁত নই, imperfections আমাদের জীবনের অংশ। আপনি যেমন শতভাগ অন্যের মনের মতো হয়ে উঠতে পারবেন না, তেমনই জীবনে শতভাগ নিখুঁত একজন সঙ্গী খুঁজে পাওয়াও অসম্ভব। তবে সঙ্গী নির্বাচনের ক্ষেত্রে যদি অসাবধানতা হয়, তবে তার মাশুল গুণতে হতে পারে সারা জীবন। নিখুঁত মানুষ নাই বা পাওয়া গেল, কিন্তু কিছু নির্দিষ্ট বিষয়ে কোনোভাবেই আপস করা উচিত নয়। যে পুরুষকে আপনি জীবনসঙ্গী হিসেবে বেছে নেওয়ার কথা ভাবছেন, তাঁর মধ্যে যদি এই সাতটি স্বভাব থাকে, তবে বিয়ের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।
১. প্রতিশ্রুতি ভঙ্গকারী:
যদি সে মুখে অনেক প্রতিশ্রুতি দেয় কিন্তু বাস্তবে সেগুলোর একটিও পালন না করে, তবে তাকে নিয়ে দ্বিতীয়বার ভাবার সময় এসেছে। একবার-দু’বার ক্ষমা করা যেতে পারে, কিন্তু প্রতিদিনই যদি একই চিত্র দেখতে হয়, তবে আপনি ক্লান্ত হয়ে পড়বেন। এমন মানুষেরা সাধারণত অন্যকে বোকা বানাতেই বেশি পছন্দ করে। সম্পর্কের ভিত্তি হলো বিশ্বাস, আর মিথ্যা প্রতিশ্রুতি সেই বিশ্বাসকে গুঁড়িয়ে দেয়।
২. নিয়ন্ত্রণকারী মনোভাব:
“এটা খাও, ওটা পরো, এভাবে হাঁটো, তুমি কোথায় ছিলে?” — প্রতিদিন যদি তার মুখ থেকে এমন প্রশ্ন শুনতে হয়, তবে সাবধান! শুরুতে হয়তো এটিকে তার যত্নশীলতা বলে মনে হতে পারে, কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে এই নিয়ন্ত্রণ আপনার শ্বাসরোধ করে দেবে। যে ব্যক্তি আপনাকে প্রতিটি পদক্ষেপে নিয়ন্ত্রণ করতে চায়, তার সঙ্গে কি আপনি সারা জীবন স্বেচ্ছায় থাকতে চান? মনে রাখবেন, সুস্থ সম্পর্কে স্বাধীনতার প্রয়োজন আছে।
৩. যত্নশীলতার অভাব:
যেকোনো সম্পর্কের মূল ভিত্তি হলো ‘দেওয়া, নেওয়া এবং ভাগ করে নেওয়া’ (giving, taking, and sharing)। পুরুষটি যদি এই ধারণায় বিশ্বাস না করে এবং কেবল নিজের সুবিধাটুকুই বোঝে, তবে তার সঙ্গে জীবন না জড়ানোই বুদ্ধিমানের কাজ। একজন ভালো সঙ্গী খুঁজুন যিনি আপনার মতো করেই সম্পর্কের প্রতি যত্নশীল। বাবা-মায়ের পরেই এমন একজন মানুষকেই আপনার জীবনে স্থান দেওয়া উচিত।
৪. একই ভুল বারবার করা:
সে কি একই ভুল বারবার করে এবং কেবল ‘সরি’ বলে দায় সারে? মনে রাখবেন, ‘সরি’ কোনো যতিচিহ্ন নয়। এটি একটি অনুভূতি যা হৃদয় থেকে আসা উচিত এবং সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে হবে, যাতে একই ভুলের পুনরাবৃত্তি না হয়। তাকে একই ভুল বারবার করার সুযোগ দেবেন না। কারণ তাকে সুযোগ দেওয়ার মাধ্যমে আপনি নিজেও এক অপরাধের অংশীদার হয়ে উঠবেন।
৫. আপনার মতামতকে গুরুত্ব না দেওয়া:
যেকোনো সম্পর্কে জড়িত সবার মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত। বিয়ের মতো দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্কের ক্ষেত্রে এটি আরও বেশি প্রাধান্য পাওয়া উচিত, কারণ দু’জনের মতামত মিলেই একটি সংসার সুষ্ঠুভাবে চলে। যদি সে আপনার মতামতের কোনো গুরুত্ব না দেয়, তবে তার বিষয়ে গভীরভাবে চিন্তা করুন। আপনার প্রতিটি মতামত তার কাছে মূল্যবান হওয়া উচিত।
৬. মিথ্যাবাদী:
পৃথিবীতে অনেক প্যাথলজিক্যাল মিথ্যাবাদী আছে। তাদের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করা মানে অপ্রয়োজনীয় চাপ এবং মানসিক যন্ত্রণাকে আমন্ত্রণ জানানো। ছোটখাটো মিথ্যা বা কিছু বিষয় গোপন করা এক জিনিস, কিন্তু যদি সে ক্রমাগত এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মিথ্যা বলতে থাকে, তবে কোনোভাবেই তাকে বিয়ে করার কথা ভাববেন না। মিথ্যার উপর ভিত্তি করে কোনো সম্পর্কই টিকে থাকতে পারে না।
৭. সারাক্ষণ পাশে থাকার প্রবণতা:
ভালোবাসার উষ্ণ স্পর্শ সবাই চায়, কিন্তু সারাক্ষণই? যদি সে আপনাকে কারও সঙ্গে মিশতে না দেয়, বন্ধু, পরিজন এমনকি বাবা-মায়ের সঙ্গে সময় কাটাতে চাইলেও আপনাকে নিজের পাশে রাখতে চায়, তবে তার বিষয়ে দ্বিতীয়বার ভাবুন। এটি ভালোবাসার চেয়ে বেশি অধিকারবোধ এবং অসুস্থ আসক্তি। যদি সে তার এই অভ্যাসে পরিবর্তন আনে, তবে ভিন্ন কথা। আর যদি না করে, তবে সারা জীবন এই মানসিক বোঝা বয়ে বেড়ানোর জন্য আপনি কি প্রস্তুত?
বিয়ে একটি জীবনের সবচেয়ে বড় সিদ্ধান্তগুলির মধ্যে একটি। তাই আবেগের বশে নয়, বরং বিচার-বুদ্ধি দিয়ে সঠিক সঙ্গী নির্বাচন করুন। আপনার আগামী জীবন সুখী হোক!