শীতের আগমনের আগেই কলকাতা-সহ দেশের অন্যান্য বড় শহরে বায়ুদূষণ এক নতুন স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করেছে। দীপাবলির পর বাতাসে দূষণকণা এতটাই বেড়ে গেছে যে, সকালের বাতাস শ্বাস নেওয়ার জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর হয়ে উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে সকালে প্রাতঃভ্রমণে যাওয়ার আগে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি।
ডাক্তাররা বলছেন, রাতের তাপমাত্রা কম থাকার কারণে ভোরের বাতাসে দূষণের মাত্রা আরও বেশি থাকে। এই দূষিত বাতাস শ্বাস নেওয়ার সময় ফুসফুসে জমতে থাকে, যা বিশেষ করে বয়স্ক, শিশু, গর্ভবতী মহিলা, এবং হৃদরোগ বা ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর হতে পারে।
সতর্কতা হিসেবে যা যা করা যেতে পারে:
প্রাতঃভ্রমণ এড়িয়ে চলুন: সম্ভব হলে কিছুদিনের জন্য সকালের হাঁটা বন্ধ রাখুন। এর বদলে সন্ধ্যার দিকে হাঁটতে চেষ্টা করুন, যখন বাতাসের গুণগত মান কিছুটা ভালো থাকে।
ইনডোর এক্সারসাইজ: যারা নিয়মিত শরীরচর্চা করতে পছন্দ করেন, তারা জিম অথবা ঘরেই যোগব্যায়াম করতে পারেন।
মাস্ক ব্যবহার: যদি একান্তই বাইরে যেতে হয়, তবে সাধারণ সার্জিক্যাল মাস্কের পরিবর্তে বিশেষ পলিউশন মাস্ক ব্যবহার করুন। তবে এই ধরনের মাস্কও দীর্ঘদিন ব্যবহার করা ঠিক নয়, কারণ আর্দ্র হয়ে গেলে তাতে জীবাণু বাসা বাঁধতে পারে। ফর্টিস হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ ডাক্তার মনীশ গাঙ্গুলি ডিসপোজেবল মাস্ক ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন। কাপড়ের মাস্ক ব্যবহার করলে তা ভালোভাবে পরিষ্কার করে রোদে শুকিয়ে নিতে হবে।
এয়ার পিউরিফায়ার: যাদের ফুসফুসের সমস্যা আছে, তাদের জন্য এয়ার পিউরিফায়ার অত্যন্ত উপকারী হতে পারে। এটি ঘরের বাতাসকে পরিশুদ্ধ রাখতে সাহায্য করে।
ঘর পরিষ্কার রাখুন: বাড়ির চারপাশে ধুলো-ময়লা জমতে দেবেন না। নিয়মিত ঘর পরিষ্কার রাখলে ঘরের মধ্যে বায়ুর গুণগত মান ভালো থাকে।
খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন:
দূষণের সঙ্গে লড়াই করার জন্য শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো জরুরি। তাই প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি এবং তাজা ফল ও শাকসবজি রাখুন। প্রসেসড ফুড এড়িয়ে চলা উচিত। শরীর ভেতর থেকে মজবুত হলে বাইরের দূষণ থেকে নিজেকে অনেকটাই রক্ষা করা সম্ভব।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলছেন, বাতাসে দূষণের মাত্রা বাড়লে আউটডোর এক্সারসাইজ় করা থেকে বিরত থাকা উচিত।