বয়ঃসন্ধিকালের ত্বক ও চুলের সমস্যা? সঠিক যত্নের সহজ উপায় জেনে নিন

বয়ঃসন্ধি একটি সুনির্দিষ্ট প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে একটি শিশুর শরীর একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের শরীরে রূপান্তরিত হয় এবং প্রজননের সক্ষমতা লাভ করে। মস্তিষ্ক থেকে গোনাডে (ডিম্বাশয় ও শুক্রাশয়) হরমোন সংকেত যাবার মাধ্যমে এটির সূচনা ঘটে।
বয়ঃসন্ধিকালে ছেলে ও মেয়ে উভয়ের শরীর ও মনে নানা ধরণের পরিবর্তন ঘটে। এ সময়ে ছেলে-মেয়েরা যেমন দ্রুত বেড়ে উঠতে থাকে। তেমনি তাদের চিন্তা চেতনায় দেখা দেয় ব্যাপক পরিবর্তন।

বয়ঃসন্ধিতে শরীর দ্রুত বদলায়। এই সময়ে হাজারো সমস্যা দেখা দেয় ত্বক ও চুলে। হরমোনের ওঠানামায় চুল ঝরতে থাকে অনেকের। একে অ্যান্ড্রোজেনেটিক অ্যালোকেশিয়া বলে। এ সমস্যা ছেলে, মেয়ে উভয়েরই হয়। আবার ত্বকে ব্রণ-ফুস্কুড়ির সমস্যাও দেখা দেয়। ব্রণর প্রাথমিক পর্যায়ে ত্বকে হালকা লালচে ভাব, গুটিগুটি দেখা দেয়। কখনও রোদ লাগলে ত্বক লাল হয়ে যাওয়ার প্রবণতাও থাকে। তাই এই সময়তে ত্বক ও চুলের বিশেষ যত্ন জরুরি।

বয়ঃসন্ধিতে ঘন ঘন হরমোনের তারতম্য ঘটে, যার দরুণ ত্বকের তৈলাক্তভাব বেড়ে যায়। অল্পেই ত্বক আর্দ্রতা হারায়। এই অতিরিক্ত তেল, ঘাম ত্বকে জমে ব্রণ, ব্ল্যাকহেডসের সমস্যা বাড়ায়। ত্বক ভালো রাখতে চাইলে বয়ঃসন্ধি থেকে নিয়ম করে যত্ন নেওয়া শুরু করা ভালো।

ব্রণ-ফুস্কুড়ি কমাতে নিয়মিত ত্বক পরিষ্কার রাখতে হবে। তার জন্য বেসন, মুসুর ডাল বাটা, দইয়ের স্ক্রাব ব্যবহার করা যেতে পারে। তা ছাড়া লেবু, মধু ও চিনির মিশ্রণ (তৈলাক্ত ও মিশ্র ত্বক) বা ওট্‌মিলের সঙ্গে মধু ও দুধ মিশিয়ে (শুষ্ক ও স্বাভাবিক ত্বক) স্ক্রাব হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে।

দোকান থেকে কেনা প্রসাধনী ব্যবহার করতে চাইলে তাতে বেনজোয়িল পার অক্সাইড বা স্যালিসাইলিক অ্যাসিড আছে কি না দেখে নেবেন। রাতে শোয়ার আগে অবশ্যই ক্রিম বা ময়েশ্চারাইজ়ার ব্যবহার করা জরুরি। তবে ত্বকের ধরন অনুযায়ী ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে।

ঘাম যদি বেশি হয়, তা হলে দিনে ২ বার গোসল করা যেতে পারে। সুতি, লিনেন জাতীয় পোশাক পরা ভালো। এই ধরনের ফ্যাব্রিক হাওয়া চলাচল অব্যাহত রাখে, ঘাম হলে তা শুষেও নেয়। এ ধরনের পোশাক পরলে আরাম পাবেন। এছাড়া অতিরিক্ত ঝাল, তেলমশলা দেওয়া খাবার না খাওয়াই ভালো। তাতে ত্বকের সমস্যা আরো বেড়ে যায়।

বয়ঃসন্ধিকালে চুল পড়াও একটি গুরুতর সমস্যা। এই বয়সে হিটিং টুলস, স্ট্রেটনার ব্যবহার না করাই ভালো। চুল মজবুত রাখতে সপ্তাহে একদিন তেল মালিশ ও ২ দিন শ্যাম্পু করা যেতে পারে। খুব বেশি শক্ত করে চুল না বাঁধাই ভালো। রাতে শোয়ার সময়ে চুল বেঁধে কাপড় জড়িয়ে রাখলে চুল পড়ার সমস্যা কমতে পারে। ৩ মাস অন্তর চুলের ডগা ট্রিম করলে চুল লম্বা হবে।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy