প্রতিদিন ১০ হাজার কদম হাঁটা কমিয়ে দিতে পারে কঠিন রোগের ঝুঁকি, নতুন গবেষণা

স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের জন্য নিয়মিত হাঁটার গুরুত্ব নতুন নয়। তবে সম্প্রতি এক গবেষণায় উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। জার্নাল ‘জামা ইন্টারনাল মেডিসিন’ ও ‘জামা নিউরোলজি’-তে প্রকাশিত এই গবেষণা অনুসারে, প্রতিদিন ১০ হাজার কদম হাঁটলে হার্ট অ্যাটাক, ক্যানসার ও ডিমেনশিয়ার মতো জটিল রোগের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো সম্ভব।

প্রায় ৮০ হাজার মানুষের ফিটনেস ট্র্যাকিং ডেটা পর্যবেক্ষণ করে এই গবেষণাটি করা হয়েছে। এতে দেখা গেছে, যারা প্রতিদিন প্রায় ১০ হাজার কদম হাঁটেন, তাদের ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি ৫০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়। গবেষণায় আরও প্রমাণিত হয়েছে যে, হাঁটার গতির সঙ্গে স্বাস্থ্য সুবিধার একটি সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে।

সমীক্ষা অনুসারে, যারা প্রতিদিন ৩০ মিনিটের জন্য দ্রুত গতিতে (প্রতি মিনিটে ৮০-১০০ পা) হাঁটেন, তাদের হৃদরোগ বা ক্যানসারের ঝুঁকি ২৫ শতাংশ কমে যায়। তাদের মধ্যে ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি ৩০ শতাংশ এবং অকাল মৃত্যুর ঝুঁকি ৩৫ শতাংশ কম থাকে। সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা ফেলো ম্যাথিউ আহমেদির মতে, যারা একটানা ৩০ মিনিট দ্রুত হাঁটতে পারেন না, তারা অল্প বিরতিতে দ্রুত হেঁটেও একই ধরনের সুবিধা পেতে পারেন।

গবেষণায় দেখা গেছে, এমনকি যারা প্রতিদিন মাত্র ২ হাজার কদম হাঁটেন, তাদেরও অকাল মৃত্যু, হৃদরোগ এবং ক্যানসারের ঝুঁকি প্রায় ১০ শতাংশ কমে যায়। অর্থাৎ, যত বেশি হাঁটা হবে, তত বেশি সুফল পাওয়া যাবে।

সিডিসি, ইউএস-এর পরামর্শ অনুযায়ী, ধীরে ধীরে হাঁটা শুরু করে সপ্তাহে ১৫০ মিনিট শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকার অভ্যাস করা উচিত। হাঁটাকে একটি আনন্দদায়ক অভ্যাসে পরিণত করার জন্য কিছু পরামর্শও দেওয়া হয়েছে: যেমন- কুকুরকে নিয়ে হাঁটতে যাওয়া, বন্ধুদের সাথে হেঁটে আড্ডা দেওয়া, ফোনের কথা বলার সময় পায়চারি করা, এবং লিফটের বদলে সিঁড়ি ব্যবহার করা ইত্যাদি।

এই গবেষণাটি প্রমাণ করে যে, ব্যস্ত জীবনযাত্রায়ও সামান্য হাঁটার অভ্যাস পরিবর্তন করে আমরা অনেক কঠিন রোগ থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারি।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy