পায়ের আঙুলের ফাঁকে ঘা কারণ ও চিকিৎসা

পায়ের আঙুলের ফাঁকে ফাঁকে ঘা হয় অনেকেরই। একে বলা হয় অ্যাথলেটের পা। চিকিৎসার পরিভাষায় বলা হয় টিনিয়া পেডিস। এটি মূলত ছত্রাকঘটিত ত্বকের সংক্রমণ, যা সাধারণত পায়ের আঙুলের ফাঁকে ফাঁকে হয়।
এক্ষেত্রে চুলকানিযুক্ত ফুসকুড়ির সৃষ্টি হয়, যা যন্ত্রণা ও জ্বালাপোড়ার সৃষ্টি করে। এর থেকে আবার ফোসকা ও ঘায়ের সৃষ্টিও হতে পারে। যা খুবই যন্ত্রণাদায়ক হতে পারে। অ্যাথলেট পায়ের ক্ষত খুব বেশি না হলে ঘরেই এর চিকিৎসা করতে পারেন। জেনে নিন করণীয়-

>> হাইড্রোজেন পারক্সাইডের ব্যবহার ছত্রাক মেরে ফেলে। সংক্রমণ না কমা পর্যন্ত দিনে দুবার ব্যবহার করুন হাইড্রোজেন পারক্সাইড।

>> টি ট্রি অয়েলে থাকে অ্যান্টিফাঙ্গাল ও অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য, যা ছত্রাক সংক্রমণের (দাদ ও ক্যানডিডিয়াসিস) চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত হয়।

২০০২ সালের এক গবেষণায় জানা যায়, চা গাছের তেল প্রতিদিন ব্যবহার করলে অ্যাথলেট পায়ের সমস্যা সেরে যায় দ্রুত। এক্ষেত্রে নারকেল তেলের সঙ্গে সামান্য টি ট্রি অয়েল মিশিয়ে দিনে দুবার ব্যবহার করুন।

>> নিম তেলও বেশ উপকারী। এতেও আছে অ্যান্টিফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য। অ্যাথলেট পায়ের সমস্যার সমাধানে নিমের তেল (বা নির্যাস) দিনে ২-৩ বার আক্রান্ত স্থানে লাগাতে পারেন।

>> অ্যাথলেট পায়ের ঘরোয়া চিকিৎসায় ব্যবহার করতে পারেন রসুনও। এক গবেষণায় এমনও দেখা গেছে যে, একটানা ৭ দিন দিনে দুবার আক্রান্ত স্থানে রসুনের নির্যাস ব্যবহারে ৭৯ শতাংশ অংশগ্রহণকারীর সুস্থতা মিলেছে।

>> ট্যালকম পাউডার, কর্ন স্টার্চ বা বেবি পাউডার ব্যবহারেও সারাতে পারেন পায়ের এই ঘা। ঘাম ও আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণে রেখে পাউডার ছত্রাকের বৃদ্ধি ও বিস্তারকে কঠিন করে তোলে। পায়ের আঙুলের ফাঁকে ফাঁকে পাউডার লাগিয়ে মোজা পরুন।

>> এই সমস্যা প্রতিরোধে পা শুকনো ও পরিষ্কার রাখতে হবে। ত্বকের আর্দ্র স্থানেই ছত্রাকের বৃদ্ধি বাড়ে। নিয়মিত আপনার মোজা পরিবর্তন করুন। বাইরে থেকে ঘরে ফিরেই পা পরিষ্কার করুন। পায়ের আঙুলের ফাঁকে ফাঁকে শুকনো রাখুন। পাবলিক পুল বা জিমে খালি পায়ে যাবেন না। খুব টাইট ফিটিং জুতা পরবেন না।

কখন ডাক্তারের কাছে যাবেন?

ঘরোয়া চিকিৎসা করার পরও যদি অ্যাথলেট পায়ের সমস্যা না কমে তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। কারণ যে কোনো ধরনের সংক্রমণ খুব গুরুতর হতে পারে। অ্যাথলেট পায়ের সমস্যাও খুব সংক্রামক।

এটি সহজেই আপনার হাতে ছড়িয়ে পড়তে পারে, বিশেষ করে যদি আপনি আক্রান্ত স্থানে আঁচড় দেন। এই ছত্রাকটি আপনার নখের নীচের অংশে এমনকি কুঁচকির অঞ্চলেও সংক্রামিত করতে পারে। যার চিকিৎসা করা আরও কঠিন হতে পারে, বা কুঁচকির অঞ্চল।

সংক্রমণ থেকে মুক্তি পেতে আপনার প্রেসক্রিপশন অ্যান্টিফাঙ্গাল (হয় মৌখিক বা সাময়িক) প্রয়োজন হতে পারে। তবে আপনার যদি ডায়াবেটিস থাকে তাহলে এর থেকে ডায়াবেটিক ফুট আলসার হতে পারে।

যদি দেখেন আক্রান্ত স্থানে লালভাব, পুঁজ, ফোলাভাব, তরল নিঃসরণ ও জ্বর কিংবা ডায়াবেটিস থাকে তাহলে স্নায়ুর ক্ষতির কারণে আপনি পায়ে ব্যথা অনুভব করতে পারেন না। এমন ক্ষেত্রে প্রথম দিকেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

Related Posts

© 2024 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy