দোল খেলুন নিজের হাতে তৈরি রং দিয়ে, দেখুন কিভাবে বানাবেন

আর কদিন পেরোলেই দোল। ত্বক আর চুল বাঁচাতে আমরা সবাই মোটামুটি চেষ্টা করি অরগ্যানিক রং ব্যবহার করে দোল খেলার। কিন্তু বাজার থেকে কেনা সে রংও যে কতটা নিরাপদ তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে। তবে চিন্তা নেই, আপনি চাইলে রান্নাঘরে মজুত সামগ্রী দিয়েই এর মধ্যেই বানিয়ে নিতে পারেন একেবারে নিরাপদ আবির আর জল রং। বাড়ির বয়স্ক বা শিশুরাও স্বচ্ছন্দে সে রং ব্যবহার করে দোল খেলতে পারবেন, যাঁদের ত্বক স্পর্শকাতর তাঁরাও নিশ্চিন্তে ব্যবহার করতে পারেন — কারও কোনও অসুবিধেই হবে না।

হাতের কাছে কী কী রাখলে সুবিধে হবে
বেসন, ময়দা, আটা। শুকনো জবা, পলাশ, গাঁদা, অপরাজিতা ফুল। হেনা, আমলকীর পাউডার। অরগ্যানিক গুঁড়ো নীল। রক্তচন্দন (কাঠ বা পাউডার যে কোনও একটা হলেই হবে), বেদানা। বিট, পালংশাক। হলুদের গুঁড়ো। আপনার শুকনো রঙের ‘বেস’ হবে বেসন, ময়দা বা আটা, তাই সেগুলি একটু বেশি পরিমাণে রাখতে হবে। লাল চন্দনের কাঠ গুঁড়ো করে নিন ব্লেন্ডারে। আবির তৈরির জন্য ফুলের শুকনো পাপড়িগুলির অর্ধেক ব্লেন্ডারে চালিয়ে পাউডারে পরিণত করে নিন। জল রং তৈরির জন্য অবশ্য বাকি অর্ধেকটা জলে ফোটাতে হবে।

শুকনো রং তৈরির পদ্ধতি
লাল: রক্তচন্দনের গুঁড়ো আর ময়দা মিশিয়ে নিন 1:1 অনুপাতে। জবা বা পলাশের গুঁড়ো আর ময়দাও এই একই অনুপাতে মেশালে পাবেন লাল রং। যদি মনে হয় যে রংটা আরও একটু গাঢ় হওয়া দরকার, তা হলে ময়দার পরিমাণ কমান।
হলুদ: বেসন আর হলুদ গুঁড়ো মেশান 2:1 অনুপাতে।
সবুজ: মেহেন্দির পাতা আর ময়দা মেশান 1:1 অনুপাতে।
নীল: নীলের গুঁড়ো আর ময়দা মেশান 1:3 অনুপাতে। অপরাজিতা ফুলের পাপড়ি দিয়ে রং তৈরি করতে চাইলে ময়দা আর ফুলের গুঁড়োর পরিমাণ হবে 1:1।
খয়েরি: আমলকী, হেনার পাউডার আর হলুদগুঁড়ো মেশাতে হবে 1:1:1 অনুপাতে।

জল রং তৈরির পদ্ধতি
লাল: বিট কেটে নিন ছোট ছোট টুকরোয়। তার পর সেটা জলে সেদ্ধ করতে বসান। যখনই মনে হবে যে আপনার মনের মতো শেড পেয়ে গিয়েছেন, নামিয়ে নিন। দরকারে আরও জল মিশিয়ে রং পাতলা করে নেওয়া যায়। বেদানার রস আর জল মিশিয়ে ফুটিয়ে নিলেই চমৎকার লাল শেড তৈরি হবে। পলাশ/ জবা ফুল জলে ফোটালেও লাল রং তৈরি হবে। জলের পরিমাণ বাড়িয়ে বা কমিয়ে তৈরি করুন পছন্দের শেড।
হলুদ: বেদানার খোসা সারা রাত ভিজিয়ে রাখুন জলে, পরদিন সেটা ছেঁকে নিন। কাঁচা হলুদ জলে ফুটিয়ে নিলেও দারুণ সুন্দর হলুদ রং তৈরি করা সম্ভব। গাঁদা ফুল জলে ফুটিয়ে নিন ভালো করে, জলের রং হলুদ হয়ে গেলে আঁচ থেকে সরিয়ে নিন। ঠান্ডা হয়ে গেলে ছেঁকে নিতে হবে।
সবুজ: পালং শাক কুচিয়ে নিয়ে জলে ফোটান। পছন্দমতো সবুজের শেড পেলে নামিয়ে নিন। জলটা ঠান্ডা হয়ে গেলে ছেঁকে নেবেন।
কমলা: মেহেন্দির গুঁড়ো বা পাতা জলে ফোটাতে আরম্ভ করুন। কিছুক্ষণের মধ্যেই কমলা রং ধরে যাবে। তখন গ্যাস অফ করে রেখে দিন। জল ঠান্ডা হলে ছেঁকে নেবেন।

বিশেষ টিপস: আপনার পছন্দের এসেনশিয়াল অয়েলের কয়েক ফোঁটা এই রঙে মেশান, আবির/ রং হয়ে উঠবে সুগন্ধি।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy