দিনের বেলা গায়ে গরম কাপড় রাখা দায়। বরং রোদের তাপ তেতে থাকে অনেকটাই। কিন্তু সন্ধ্যা হতেই ভিন্ন রূপ। শীতের হাওয়া এখনও পিছু ছাড়ছে না যেন। রাতে কম্বল না জড়ালে মিলছে না উষ্ণতা।
মোটে চার থেকে ছয় ঘণ্টার ব্যবধানে তাপমাত্রার ওঠানামা ৬-৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চিকিৎসকরা বলছেন, তাপমাত্রার এই হঠাৎ পরিবর্তিত তারতম্যের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারছে না আমাদের শরীর। তাতেই এলেমেলো হয়ে যাচ্ছে রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা। আর সেই সুযোগেই আক্রমণ করছে ভাইরাস, অ্যালার্জেন, ব্যাকটেরিয়া। শ্বাসনালীর সংক্রমণে ঘায়েল হচ্ছে আমজনতা। ফলাফল, ঘরে-ঘরে সর্দি-কাশি-জ্বর।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এবার শীতে দাঁত-কপাটি লেগে যাওয়ার মতো ঠান্ডা না পড়লেও একটি ধারাবাহিকতা ছিল। তাই শরীরও সেভাবেই মানিয়ে নিয়েছিল। কিন্তু দিন কতক হলো সকাল-সন্ধ্যায় ঠান্ডা লাগলেও বেলা বাড়তেই গরম লাগছে। দুপুর-বিকেল ও সন্ধ্যা-রাতের মধ্যে সময়ের যা ব্যবধান, তার তুলনায় অনেক বেশি পার্থক্য তাপমাত্রায়।
এই সময়ে দুর্বল হয়ে যায় শরীরী প্রতিরক্ষা। আর সেই সুযোগেই হামলা চালাচ্ছে জীবাণুরা। বায়ুদূষণ আজকাল যেহেতু এমনিতেই শরীরকে ঝাঁঝরা করে রেখেছে, তাই সামান্য হামলাতেই ভেঙে পড়ছে প্রতিরোধের দেয়াল।
এসি-ফ্রিজ-গিজারের মতো শরীরেও থাকে থার্মোস্ট্যাট। সব সময়ে তা শরীরের তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা ৯৮.৪ ডিগ্রি ফারেনহাইটে ধরে রাখতে চায়। মুশকিল হলো, হঠাৎ বাইরের তাপমাত্রার বাড়াবাড়ি বদল হলে শরীরের থার্মোস্ট্যাট যথাযথ কাজ করে না। তখনই ইমিনউনিটি তার কর্তব্যে গাফিলতি করে ফেলে। হয় অতিসক্রিয় হয়ে ওঠে (তখন অ্যালার্জির শিকার হয় শরীর) অথবা সক্রিয়তা কমে যায় (তখন জীবাণু সংক্রমণের শিকার হয় শরীর)। দ্বিতীয়টিই বেশি।
আসল সমস্যাটা হলো, আমাদের শরীরই ঠান্ডা-গরম মানিয়ে নিতে পারে না চট করে। তাই বিকাল ও সন্ধ্যার সন্ধিক্ষণ খুব গুরুত্বপূর্ণ। বিকেলে গরম লাগলেও সন্ধ্যার কথা ভেবে শীতবস্ত্র সঙ্গে রাখা জরুরি। তা না মেনে চললেই বাঁধবে অসুখ।